চেনা বিদেশিতে রাসেলের শুভ সূচনা

পুরনো বিদেশিদের জায়গায় ঢাকা মাঠের চেনা বিদেশিতে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। চেনা বিদেশি মানে অন্যান্য দলের ভালো পারফরমারদের নিয়ে নতুন সাজে সুফল মিলেছে প্রথম ম্যাচে।

নতুন বিদেশিতে শেখ রাসেল ভালো খেলেছে। বিশেষ করে কিরগিজ মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুইশোবেকভ ও নাইজেরিয়ান ওবি মোনেকের উপস্থিতিতে মধ্যমাঠে দাপট দেখিয়েছে তারা। সেই দাপটে গোলটা আরো আগে পেতে পারত। পায়নি দেশি তকলিছ আহমেদ ও নতুন ফরোয়ার্ড লোপেজ রদ্রিগেজের জন্য, তাঁদের পায়ে বেশ কিছু ভালো মুভের অপমৃত্যু হয়েছে। নতুন ব্রাজিলিয়ান ‘নাম্বার নাইনে’ সবাই অনেক আগ্রহী হলেও তিনি নজর কাড়ার মতো কিছু দেখাতে পারেননি প্রথম ম্যাচে। শুধুই পুলিশ বক্সের আশপাশে ঘুরেছেন। কয়েক দিন আগে রাসেলের ক্যাম্পে যোগ দেওয়া এই ফুটবলারের ফিটনেসের ঘাটতি স্পষ্ট। তাই ৬০ মিনিটে তাঁকে তুলে নিয়ে রুম্মন হোসেনকে মাঠে নামান কোচ। যদিও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যভেদ করেছেন তাজিক ডিফেন্ডার আসরোভ। গোল করায় যেমন তাঁর ভূমিকা তেমনি ঠেকানোতেও তিনি অনন্য, বেশ কয়েকবার ঠেকিয়েছেন পুলিশের ফরোয়ার্ড বাল্লো ফামোসাকে। গতবার রহমতগঞ্জের ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ওঠার পেছনে এই তাজিক ডিফেন্ডারের ছিল অনেক অবদান। নতুন দলে মৌসুমের শুরু থেকেই দুর্বার আসরোভ।

চোখ প্রথম খুঁজে ফিরেছে মিডফিল্ডার ওবি মোনেকেকে। গত মৌসুমে সাদাকালোর জার্সিতে তিনি ছিলেন মাঝমাঠের মোটর গাড়ি, স্টার্ট দিয়ে ছেড়ে দিলেই সারা মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো তাঁর স্বভাব। সেই মোনেকে রাসেলে শুরু করেন রাইট উইংয়ে। তার পা থেকে দু-তিনটা নিখুঁত ক্রস বের হলে হয়তো দীর্ঘদেহী নতুন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের গোলের দেখা মিলবে। সেই আশায় গুড়ে বালি। কিন্তু লোপেজ রদ্রিগেজের নড়াচড়ায়ও গোলের ক্ষুধা দেখা যায়নি। তবে ২৪ মিনিটে নাইজেরিয়ান ওবি মোনেকে মিস করেন দলকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ। বাঁ দিক থেকে ইয়ামিন মুন্নার চমৎকার ক্রসে পোস্টের সামনে থেকেও তিনি শট নিতে পারেননি। ৩২ মিনিটে এই নাইজেরিয়ানের পা থেকেই বের হওয়া আরেক ক্রসে তকলিছ আহমেদ অমার্জনীয় মিস করেছেন। পাশে কোনো ডিফেন্ডার না থাকার পরও পোস্টের সামনে থেকে এই দেশি ফরোয়ার্ড হেড করেছেন বাইরে!

শেখ রাসেলের দুটো ভালো সুযোগ নষ্ট হওয়ার পর হঠাৎ পুলিশের ঝাঁজ দেখা যায়। ৪০ মিনিটে কিরগিজ মিডফিল্ডার আখমেদভের বাঁ পায়ের শট ছিল ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো। গোলরক্ষক আশরাফুল রানা কোনো রকমে সেভ করে রাসেল পোস্ট অক্ষত রাখেন। পুলিশের সমস্যা হলো এই আখমেদভ ছাড়া বাকি তিন বিদেশির খেলা চোখে পড়েনি। গত মৌসুমে পুলিশ চমৎকার খেলেছে সিডনি রিভেরা-লুকার নৈপুণ্যে, তাঁরাই প্রথমবারের মতো দলকে ফেডারেশন কাপে সেমিফাইনালে তুলে নিয়েছিলেন। অথচ এবার আইভরি কোস্টের বালো ফামোসা ফাঁকা পোস্টেও শট নিতে পারেন না!

বিরতির পর তাজিক ডিফেন্ডার আসরোভে রাসেলের গোলের গেরো খোলে। ৫০ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বখতিয়ার দুইশোবেকভ চমৎকার বুদ্ধিদীপ্ত এক ফ্রি কিক নেন। পোস্টে শট না করে তিনি বল তুলে দেন ডিফেন্স লাইনের পেছনে, তাতে টোকা দিয়ে আসরোভ গোলরক্ষক নেহালকে পরাস্ত করে এগিয়ে নেন শেখ রাসেলকে। এই গোলে গতবার টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়া দলের আশার পালে হাওয়া লাগে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া পুলিশ যে এরপর গোলের তল্লাশি শুরু করে। স্বাভাবিকভাবে গোল ধরে রাখার খেলা খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ একটু রক্ষণাত্মক হয়েছিল। সেই সুযোগে পুলিশি দাপটের শুরু। তাতে কয়েকবার ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েও পারেনি। ৫৭ মিনিটের সুযোগটি ছিল চমৎকার। আখমেদভ দারুণ বল বাড়িয়ে গোলমুখ খুলে দিলেও বালো ফামোসার ‘ফার্স্ট টাচ’ ভালো না হাওয়া ভেস্তে গেছে সে সুযোগ। পুলিশি গোল তল্লাশি বৃথা যাওয়ায় আসরোভে শুভ সূচনা করেছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ