চীনে শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ১১১

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ১১১ জন নিহত হয়েছেন।এ সময় আহত হয়েছেন আরও ২৩০ জন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, দেশটির গানসু ও কিংহাই প্রদেশের সীমান্ত অঞ্চলে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পরপরই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

দ্য ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমএসসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ছিল ৬ দশমিক ১ মাত্রার। এটির উৎপত্তিস্থল গানসু প্রদেশের রাজধানী লানঝোর ১০২ কিলোমিটার পশ্চিম–দক্ষিণপশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠের ৩৫ কিলোমিটার গভীরে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ৫ দশমিক ৯ মাত্রার, যদিও শুরুতে ৬ মাত্রার কথা বলা হয়েছিল।

আর সিনহুয়া বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। ভূমিকম্পের পর কয়েকবার পরাঘাত (আফটারশক) অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্প আঘাত হানার পর কিছু গ্রামে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে ধসে পড়া ভবনগুলোর ছাদ ও ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে জরুরি উদ্ধারকাজ।

ভূমিকম্পের পর তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, উদ্ধার কার্যক্রম, আহত ব্যক্তিদের সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া এবং হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয়ে সব ধরনের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে।

এদিকে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, উদ্ধার ও ত্রাণ প্রচেষ্টা চলছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও অন্যান্য প্রভাব মূল্যায়নের জন্য একটি ওয়ার্কিং কমিটি পাঠানো হয়েছে। প্রাদেশিক ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের প্রায় ২ হাজার ২০০ উদ্ধারকর্মীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি পেশাদার বিভিন্ন জরুরি উদ্ধারকারী দল, সেনাবাহিনী ও পুলিশও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে।

দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় এলাকাটি বেশি উচ্চতার হওয়ায় সেখানে ব্যাপক ঠাণ্ডা পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে উদ্ধার তৎপরতাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালেও গানসুর তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চীনজুড়েই বর্তমানে শীতকাল বিরাজ করায় পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।

উল্লেখ্য, গানসুর মতো উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো বেশ ভূমিকম্প প্রবণ। অঞ্চলটি চুংহাই-তিব্বত মালভূমির পূর্ব সীমানায় অবস্থিত, যা একটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত। সম্প্রতি কয়েক দশকের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটে ২০০৮ সালে। সে বছর চীনের সিচুয়ানে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল এবং এই ভূমিকম্পে ৭০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।