চীনে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে এখনো আটকে পড়া রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চীনের করোনা ভাইরাস নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সে দেশে বসবাসরত বাংলাদেশীরা। যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। যদিও গতকাল শনিবার ৩১৬ জনকে ফিরে আনা হয়েছে এরই মধ্যে। তবে এখনো যারা আটকা পড়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে এখনো এ ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে চরম। যাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থী।

স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাল স্টুডেন্ট ইন চায়না’র ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, চীনে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। তবে ২০০১৯ সালে আরো অন্তত দেড় থেকে দুই হাজার শিক্ষার্থী সে চীনে প্রবেশ করেছেন শিক্ষার জন্য-এমনটিও ধারণা করা হয়। তবে আদৌ কতজন শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশী চীনে বসবাস করেন তা সে দেশের বাংলাদেশী দূতাবাস জানাতে পারেনি। এর মধ্যে চীনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রদেশ উহানে আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ফিরে আনা শুরু করেছে সরকার। এই প্রদেশে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী আছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে শনিবার ৩১৬ জনকে ফিরে আনা হয়েছে। তবে এখনো ঘরের মধ্যে আটকা থেকে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অন্যরা।

হুবেই প্রদেশের উহান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের মাস্টার্স ইন ভেহিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী জোবায়ের হক জিসান বলেন, ‘আমারা আতঙ্কিত ছিলাম। তবে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা খুশি। তবে রাস্তায় কোনো যানবাহন চলাচলও করছে না। এই অবস্থায় আমরা এখনো চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি করোনা ভাইরাস নিয়ে।’

চীনের কুনমিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ মোহাম্মদ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ইমদাদুল হক জানান, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজশাহী অঞ্চলের অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী ছিলেন। যাদের অধিকাংশই চলে গেছে নিজ দায়িত্বে। চীনে এখন ছুটি চলছে। এই ছুটির মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন নিজ উদ্যোগে। তবে এখনো অন্তত ৫-৭ জন শিক্ষার্থী আছেন কুনমিং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়াও এই প্রদেশের আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে অন্তত ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন বাংলাদেশী। যাদের অধিকাংশই এরই মধ্যে চীন চেড়েছেন ছুটিতে বা করোনা ভাইরাস আতঙ্কে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সবাই ভালো আছি। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মেটোরির বাইরে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। তার পরেও করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা আতঙ্কে আছি।’

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘কুনমিং প্রদেশে ৪৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। তবে এর মধ্যে কোনো বাংলাদেশী আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদেশী সব শিক্ষার্থীর ওপর কড়া নজর রেখেছে। কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সব খাবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই দিচ্ছে।’

স/আর