চিঠি গেল কই?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

‘মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে টেলিনরের উকিল নোটিশ’ গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশের পর বেশ কয়েকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে সারাদেশে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলে।

২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিষয়টি আলোচনায় আনেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। যদিও অডিট আপত্তির ইস্যুতে একই বছরের ১৮ নভেম্বর উচ্চ আদালতের শুনানিতে জিপির মূল কোম্পানি টেলিনরের দেয়া এই নোটিশ নিয়ে আদালতের দৃষ্টি  আকর্ষণ করা হয়েছিল। সেটি তখন আলোচনায় আসেনি।

ওই নোটিশটি দেয়া হয়েছিল ৩০ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের অ্যালেন অ্যান্ড ওভারি এলএলপি নামের একটি আইনি সংস্থার মাধ্যমে, ২০০৪ সালে বাংলাদেশ এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে স্বাক্ষর হওয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর দেয়া ওই চিঠিতে স্বাক্ষর ছিলো ওই আইনি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করা ম্যাথিউ গিয়ারিং ও ম্যাথিউ হগসনের।

নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে টেলিনর গ্রুপের এশিয়া রিজিয়নের কমিউনিকেশন্স পরিচালক ক্যাথরিন স্ট্যাং লন্ড জানিয়েছিলেন,‘অডিট আপত্তির বিষয়টি স্বচ্ছভাবে নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে একটি গঠনমূলক সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আলোচনার আহবান জানাতেই এই নোটিশ প্রদান করে টেলিনর।’

তুমুল  আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় সরকার। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর ওই চিঠির উত্তর পাঠান ম্যাথিউ গিয়ারিং ও ম্যাথিউ হগসন বরাবর। যার অনুলিপি দেয়া রয়েছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং বিটিআরসির আইনি সংস্থা লেক্স কাউন্সেল বরাবর।

কিন্তু প্রায় আড়াই মাসেও নোটিশের উত্তর দেয়া এই চিঠি টেলিনর পায়নি।

গ্রামীণফোনের ডাইরেক্টর ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত রোববার টেকশহরডটকমকে জানান, তাদের মূল কোম্পানি টেলিনর সরকারের দেয়া ওই চিঠি পায়নি। তাই টেলিনরের ওই নোটিশের বিপরীতে দেয়া সরকারের উত্তরের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও টেলিনরের নেই।

নোটিশের উত্তর টেলিনরের না পাওয়ার বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার টেকশহরডটকমকে বলেন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যথাযথ মাধ্যমে ওই নোটিশের জবাব দেয়া হয়েছে। এটি ডাক, ফ্যাক্স ও মেইলে ঠিকঠাক ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে টেলিনর এশিয়া বলেছিলো, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির মধ্যেই আলোচনার অডিট আপত্তির বিষয়টি নিস্পত্তি করা সম্ভব।

অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে জবাবে বলা হয়েছে, যেহেতু বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সুতরাং এখনই এটি নিয়ে আরবিট্রেশন বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এখন কথা হলো, উত্তর দিয়ে সরকারের পাঠানো এই চিঠি চায়নার হংকংয়ে ডাক মাধ্যমে না হয় সময় লাগছে কিন্তু মেইল বা ফ্যাক্সেও কি চিঠি পৌঁছাতে আড়াই মাস লাগছে!

তাহলে চিঠি গেল কই?