চারঘাটের নির্মিত সেতু সংযোগ সড়কের অভাবে কাজে মিলছেনা সুফল

 

মিজানুর রহমান:
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালূহাটি চককৃষ্ণপুর ও ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকার।কয়েক লাখ মানুষের প্রানের দাবি ছিল পদ্মা নদীর শাখা বড়ালের ওপর একটি সেতুর নির্মানের। দুটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের সেই দাবির প্রতিফলন ঘটান চারঘাট-বাঘা আসনের সাংসদ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম।

২০১৮ সালে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে বড়ালের ওপর সেতু নির্মান কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২০ সালে। তবে সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়কের অভাবে কাজে আসছে না সপ্নের সেতুর সুফল। ফলে চরম দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই চলছে দুটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষের জীবনমান। এ নিয়ে দিন দিন ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে এলাকাবাসীর মাঝে।

সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে দুটি ইউনিয়নের দুটি এলাকাকে বিভক্ত করে রাখে বড়াল নদী। বড়ালের ওপর সেতু না থাকার কারনে মাঠের ফসল থেকে শুরু করে সব ধরণের কুষিদ্রবাদি দুরের কোন বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পেরে মাঠেই অল্প দামে বিক্রি করতে হতো।

এছাড়াও অনেক সময় মাঠেই পচে নষ্ট হতো ফসল। এতে চরম লোকসান গনিতে হতো কৃষকদের। তাছাড়া স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের বর্ষ মৌসুমে চরম ঝুকি নিয়ে পার হতো হতো বড়াল নদী। এমন দুর্ভোগের কারণে দুটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষের প্রানের দাবি ছিল বড়ালের ওপর একটি সেতু নির্মানের। সেই দাবির প্রতিফলন ঘটান চারঘাট-বাঘার সাংসদ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম।

তিনি দুটি এলাকার মানুষের কষ্টের কথা জানতে পেরে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন বড়ালের ওপর সেতু নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণের। তারই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে শুরু হয় বড়ালের ওপর সেতু নির্মান কাজের। সেই নির্মান কাজ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের দিকে।

তবে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হলেও সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়কের অভাবে দুটি এলাকার কয়েক লাখ মানুরষর সপ্নের সেতু কোন কাজে আসছে না। বরং বেড়েছে কয়েক গুন ঝামেলা। সেতু নির্মানের আগে এলাকাবাসীর উদ্যোগে বড়ালের ওপর বাশের সাকো দিয়ে ছোট ছোট বাচ্চারা ও বয়স্ক লোকজন যাতায়াত করতে পারলেও এখন সংযোগ সড়কের কারণে সেটিও বন্ধ রয়েছে। এতে করে দুটি এলাকার কয়েক লাখ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।

কথা হয় জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকার ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, বড়াল নদীর ওপর এলাকার মানুষের সপ্নের সেতু নির্মিত হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে সেই সপ্নের সেতু কোন কাজেই আসছে না। সেতুর পাশে সংযোগ সড়কের ওপর বেআইনী ভাবে অবৈধ দখলদাররা দখল করে রাখায় সংযোগ সড়ক হচ্ছে না। কতিপয় ব্যাক্তির ব্যাক্তি স্বার্থে কাছে আজ কয়েক লাখ মানুষ অসহায়। ফলে যে কারণে বড়ালের ওপর নির্মান করা হয়েছে সপ্নের সেতু সেই মানুষের দুর্ভোগ আজ চরম পর্যায়ে পৌছেছে। মানুষের ফসল এখনো মাঠেই নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এলাকার কৃষকরা।

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলীকে এলাকার মানুষ অবৈধ দখলদার বিরুদ্ধে কার্য্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সেতুর সংযোগ নির্মানের দাবি জানালেও রহস্য জনক কারণে এক বছর ধরে কোন কাজই হচ্ছে না।
অপর দিকে কালুহাটি চককৃষ্ণপুর এলাকার ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন বলেন, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। এখনো সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়নি। মাটি খুড়ে বেড বানিয়েই যেন তাদের দায়িত্ব শেষ। এছাড়াও সেতুর ওপর মিক্সার মেশিণ ও পাথর রেখেই সেতুর কাজ শেষ করা হয়েছে। দ্রুত সেতুর দুপাশে সংযোগ সড়ক নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘবের ব্যবস্থ্ার করে সপ্নের সেতু চালুর দাবি জানিয়েছেন দুটি এলাকার কয়েকলাখ মানুষ।

বিষয়টি সম্পর্কে চারঘাট উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর এক পাশে বেড বানিয়ে কাজ শুর করা হয়েছে। অন্যপাশে দখলদারের বাড়ী ঘর থাকায় একটু জটিলতা দেথা দিয়েছে। তার পরেও দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য দুইবার নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করে সেতু দিয়ে জনসাধারণের চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে।