চাঁপাইনবাবগঞ্জে হলুদ রঙের তরমুজ চাষ হচ্ছে

কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:


গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ১৫ কাঠা জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার শরিফুল ইসলাম। চায়না জাতের এই তরমুজের বীজ চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে ৮ হাজার টাকায় সংগ্রহ করেন। আর শরিফুলকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ফলন ভালো এবং দাম বেশি পাওয়ায় এবার তিনি মোট ৬ বিঘা জমিতে দু’জাতের তরমুজ চাষ করেছেন।



শরিফুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালে তিনি প্রথমে নিজের ১৫ কাঠা জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করেন। তাতে মোট খরচ হয় ২৫ হাজার টাকা। সেখান থেকে আয় করেন খরচ বাদে ৭৫ হাজার টাকা। সে তরমুজ বিক্রি শেষে আবারও তিনি ১৫ কাটা জমিতে তরমুজ চাষ করে আয় করেন ৭৫ হাজার টাকার ওপরে।

তিনি আরো জানান, বছরে ৩ বার হলুদ জাতের এই তরমুজ পাওয়া সম্ভব। এ বছর তিনি মোট ৬ বিঘা জমিতে কালো এবং হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন। দুদিনে ৭০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। সেই সঙ্গে একই উপজেলার আবদুল মমিন ও শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের মনিরুলকে ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে নিয়েছেন।

শরিফুল ইসলাম আরও জানান, তিনি তরমুজের পাশাপাশি আট বিঘা জমিতে ধানচাষ করেছেন। ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই কৃষক সব মিলিয়ে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। অপর তরমুজ চাষি মমিন জানান, তিনি মূলত ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। শ্রমিকের পাশাপাশি তিনি তরমুজ চাষ করছেন।

তিনি জানান, তরমুজে যে পরিমাণ আয় হচ্ছে তাতে অন্যের ইটভাটায় আর শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হবে না। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তরমুজের ক্ষেতে বেশ কিছু শ্রমিক লাগে। সে কাজগুলো নিজে করতে পারলে আয় আরও বেড়ে যাবে।

তরমুজ চাষি মনিরুল ইসলাম জানালেন, তিনি বছরে একবার ধানচাষ করতেন। ধানচাষ করে তার সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এখন তরমুজ চাষ করে অধিক পরিমাণে আয় করছেন। তিনি জানান, তরমুজ চাষ একটি ঝুঁকিপূর্ণ ফসল। সন্তানের মতো যত্ন করে পুষ্ট করে তুলতে হয়। সময়মতো সার-বিষ ও পানি দিতে হয়। চলতি মৌসুমে এবার বৃষ্টি না হওয়ায় খরচ বেড়ে গেছে। বাইরের ডিপ টিউবওয়েল থেকে পানি দিতে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে। তারপরেও ফলন ভালো হয়েছে। ‘করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসতে পারছেন না। ফলে কম দাম হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে সব ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। কৃষকদের এখন হলুদ এবং কালো রংয়ের তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সময়মতো ক্ষেতে গিয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।