চাঁপাইনবাবগঞ্জে শ্মশান-মন্দিরের জমি দখল করে ঘর নির্মাণ: গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আদিবাসীদের শ্মশান-মন্দিরের জমি দখল করে নির্মাণ করা ঘর উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এসব উচ্ছেদ করে প্রশাসন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মিরাকাঠাল গ্রাম সংলগ্ন সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ধোবাপুকুর পাড়ে আদিবাসিদের (ক্ষুদ্র জাতিসত্তা) শ্মশান ও মন্দিরের জমি দখল করে পার্শ্ববর্তী লোকজনের নির্মাণ করা ঘর শুক্রবার বিকেলে উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন।
আদিবাসীদের অভিযোগ, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার আব্দুল হান্নান নামে এক ব্যক্তির মদতেই কিছু লোক গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে ৩০ থেকে ৪০ টি ঘর নির্মাণ করে।
গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিন কামাল জানান, শুক্রবার বিকেলে গোমস্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ আহমেদ ও তার নেতৃত্বে পুলিশ শ্মশানের জমিতে নির্মাণ করা ঘরগুলো উচ্ছেদ করে। এ সময় কিছু লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে আসে। পুলিশ তাড়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, ধোবাপুকুর পাড়ে আদিবাসিদের শ্মশান ও মন্দিরের জমি নিয়ে তাদের সঙ্গে আব্দুল হান্নানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আদিবাসিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপোস মীমাংসার জন্য শুক্রবার বেলা ১১টায় উভয় পক্ষকে থানায় ডাকা হয়। কিন্তু আব্দুল হান্নান উপস্থিত না হওয়ায় আপোষ হয়নি।
আদিবাসীরা অভিযোগ করেন, আব্দুল হান্নানের উস্কানিতে স্থানীয় কিছু লোক সরকারি খাস পুকুরপাড়ে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হওয়া শ্মশান ও মন্দিরের জমি দখলের জন্য গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ৩০্ থেকে ৪০টি ঘর নির্মাণ করে।
আদিবাসীরা অভিযোগ করেন, এলাকায় উস্কানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর পাঁয়তারা চলছে। মিরাকাঠালসহ আদিবাসীদের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষেরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এস এম জাকারিয়া জানান, শুক্রবার ঘর উচ্ছেদের আগে আদিবাসী এক নারী থানায় ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করে। শুক্রবার বিকেলে ঘর উচ্ছেদের পর শনিবার বিকেল পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল বলেও জানান তিনি। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এর আগে, গত ৮ জুলাই শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই এলাকায় আদিবাসীদের সাথে দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়। ৯ জুলাই এর প্রতিবাদে কয়েকটি আদিবাসী গ্রাম ও সংগঠন গোমস্তাপুরে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে এবং রাতে থানায় মামলা করে।
স/অ