সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাখের আলী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী-বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, নিহত রাখাল সেলিমের লাশ রাতেই সহযোগীরা সীমান্ত পার করে নিয়ে আসতে পারলেও অপর রাখাল আবু বাক্কারের লাশ এখনো বিএসএফের দখলে রয়েছে।
এলাকাবাসী সীমান্তে এই হতাহতের ঘটনার জন্য বাখের আলীর অবৈধ সীমান্ত খাটালটি বন্ধের দাবি করেছেন। পাশাপাশি এই খাটাল পরিচালনাকারী কুষ্টিয়ার আবদুল সালামকে গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে বাখের আলী সীমান্ত খাটালের মালিক আব্দুস সালামের সহায়তায় ৪০ থেকে ৫০ জন বাংলাদেশি রাখাল পদ্মা নদী পার হয়ে অবৈধভাবে ভারতের বাহুড়া সীমান্তে প্রবেশ করে। রাত আনুমানিক পৌনে ২টার দিকে তারা দুই শতাধিক গরু মহিষ নিয়ে সীমান্ত অতিক্রমকালে ভারতের বাহুড়া সীমান্ত ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যরা তাদের গতিরোধ করে।
এসময় বাংলাদেশি রাখালরা বাধা ভেঙে গরু মহিষ নিয়ে আসার চেষ্টা করলে বিএসএফ সদস্যরা শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেন। ফলে ভারতীয় সীমান্তের ২৫০ গজ অভ্যন্তরে মোট ৫ জন রাখাল গুলিবিদ্ধ হয়।
এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই মারা যান সেলিম হোসেন (৩৪)। তার বাড়ি শিবগঞ্জে। অন্যদিকে নিহত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের মালবাগডাঙ্গা কটাপাড়া গ্রামের আবু বাক্কারের লাশ উদ্ধার করে বিএসএফ নিজেদের হেফাজতে নেয়।
সেলিমের লাশ পরিবারের সদস্যরা রাতেই তড়িঘড়ি করে দাফন করেন বলে জানা গেছে।
বাক্কারের লাশ বিএসএফ কোথায় রেখেছে এবং গুলিতে আহত আরও তিনজন রাখালের সর্বশেষ অবস্থা কী, সে তথ্য বিজিবির কাছে নেই বলে জানিয়েছেন বাখের আলী বিজিবি ফাঁড়ির সদস্যরা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাজ্জাদ সরোয়ার বলেন, কয়েকজন রাখাল হতাহতের খবর পেয়েছেন, কিন্তু নির্দিষ্ট করে কয়জন নিহত হয়েছেন তার তথ্য নেই। এই বিষয়ে বিজিবি তদন্ত শুরু করে দেখছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে অভিযোগ উঠেছে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশি রাখাল ভারতে যাওয়ার বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাখের আলী, জোহরপুর টেক, জোহরপুর ও রঘুনাথপুর সীমান্ত পথে প্রতিরাতেই রাখাল যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ জেড এম নুরুল হক বলেন, এগুলির অনুমোদন জেলা টাস্কফোর্স থেকে দেয়া হয়নি। উচ্চ আদালতে রিট করে তারা খাটালগুলি পরিচালনা করছেন। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে নীতিমালার আওতায় খাটালগুলি বন্ধ করা হবে বলেও জানান তিনি।