চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম পাড়া যাবে ২৫ মে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে আগামী ২৫ মে থেকে।  আম পাড়া ও বাজারজাতের নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রণয়ণের লক্ষে সংশ্লিস্ট পক্ষসমুহকে নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আম আড়ৎদার,ব্যবসায়ী,চাষী,কৃষি দপ্তর,পরিবহন ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও প্রাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গোপাল ভোগ আম পাড়ার সময় ২৫ মে, হিমসাগর বা খিরশাপাত আম ২৮ মে হতে, লক্ষনভোগ/লক্ষন ১ জুন, ল্যাংড়া ও বোম্বাই- ৫ জুন, ফজলি,সুরমা ফজলি ও আ¤্রপালি ১৫ জুন। আশ্বিনা আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ জুলাই। পর্যায়ক্রমে যখন যে জাতের আম পরিপক্ক হবে সে আমটি যাতে পাড়া হয় সেই লক্ষে সবার মতমত নিয়ে আমের ক্যালেন্ডার তৈরী করা হয়েছে।
তবে ক্যালেন্ডারের সময়সীমার আগেই যদি কারো গাছে আম পাকে তাহলে তিনি কৃষি বিভাগকে জানালে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁর গাছ পরিদর্শন করে তাঁকে আম পাড়ার অনুমতি দেয়া হবে। ফলে আম পাড়ার সময় নিয়ে সংশয় দূর হলো চাষীদের। বিগত বছরগুলিতে গাছে আম পেকে যাওয়ার পরও বাজারজাত না করতে পারায় অনেক চাষী ও ব্যবসায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হন। এ নিয়ে প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্বন্দ সৃষ্টি হত। চলতি মৌসুমে চাষী বা ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে লক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় আমে অবৈধ কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাতকরণ ও অসময়ে আম বাজারজাতকরণ রোধ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় আমের ওজনে কারচুপির বিষয়টিও উঠে আসে। আমের মন ৪০ কেজিতে নির্ধারিত হবে। ওজনে ডিজিটাল পাল্লা ব্যবহার না হলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা সহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। এছাড়া আমের ওজনে কৃষক পর্যায়ে চাঁদাবাজি ও পরিবহনে চাঁদাবাজির বিষয়েও আলোচনা হয়। এ সব কঠোরভাবে দমনের সিদ্ধান্ত হয়। জেলার কানসাট ও অনান্য স্থানে সড়কে আমের ট্রাক লোড করার মাধ্যমে যানজট সৃষ্টির ব্যাপারেও আলোচনা হয়। সড়কে ট্রাক লোডের সময়সীমা রাত ৮টার পরে নির্ধারিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হুদা, কল্যাণপুর উদ্যানতত্ব কেন্দ্রের উপপরিচালক ড.সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তৌফিকুল ইসলাম, ভোলাহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম, আঞ্চলিক উদ্যানত্ব গবেষনা কেন্দ্রের উদ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল আলম, কানসাট ইউপি চেয়ারম্যান বেনাউল ইসলাম, ভোলাহাট আম ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক,কানসাট আম আড়তদার সমিতির সভাপতি হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

 

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান জানান, স্বাস্থ্যসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষে তাঁরা একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
ইতিমধ্যেই জেলা ব্রান্ডিং এর অংশ হিসাবে ‘আম’-কে তুলে ধরা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলায় এ বছর ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমির আম বাগানে প্রায় আড়াইশ জাতের ২২ লক্ষ আম গাছে আড়াই লক্ষাধিক মেট্রিক টন (হেক্টরপ্রতি ১০ টন) আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।

স/অ