চলনবিলে পাঁচ শতাধিক কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে পচছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
নাটোরের সিংড়ার চলনবিলের সোনাপাতিল ও বাঁশবাড়িয়া খালটি এখন কৃষকের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। টানা কয়েক দিনের ভারি বষর্ণে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে এই খাল ফুসে উঠে উপজেলার ইটালী ও ডাহিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৯টি গ্রামের ফসলি মাঠ নিমজ্জিত হয়ে এই অঞ্চলের কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও নাগর নদীর পানি নতুন করে আরো বৃদ্ধি পাওয়া সারদানগর বাঁধ প্লাবিত হয়ে সাদরানগর, জয়নগর, হুলহুলিয়া ও ছাতারদীঘি ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে পচছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি নাটোর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: রফিকুল ইসলাম ও সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো: সাজ্জাদ হোসেন ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় সারদানগর বাঁধ দিয়ে চলনবিলে প্রবেশ করে উপজেলার চৌগ্রাম, ছাতারদীঘি ও তাজপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ফসলি মাঠ নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়াও সিংড়ার চলনবিলের পানি নিষ্কাসনের জন্য পানাসি প্রকল্পের খননকৃত বাঁশবাড়িয়া ও সোনাপাতিল খাল উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফুসে উঠে ডাহিয়া, সাতপুকুরিয়া, বেড়াবাড়ি, কাউয়াটিকরী, বিলদহর, তাজপুর, হিজলী, বাঁশবাড়িয়াসহ আরো কয়েকটি গ্রামের বোরো ও ভূট্রার আধা-পাকা ক্ষেত নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ফলে অকালে ফসল ডুবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা। তাছাড়া শ্রমিকদের জন্য কৃষকদের গুনতে জন্য বাড়তি টাকা।
চলনবিলের ডাহিয়া গ্রামের ইমান আলী ও মকলেছুর রহমানসহ অনেকেই সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, উজানের বর্ষণ ও ঢলের পানিতে বাঁশবাড়িয়া ও সোনাপাতিল খাল ফুসে উঠে চলনবিলের বোরো ধান ও ভুট্রা ডুবে কৃষকরা এখন আতঙ্কিত। হরদমার বড় নদী নামক এলাকায় এই খালের পানি নামার মুখে খনন না করায় এই খালটি এখন কৃষকের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, গত বছর ১ মে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কালে এই খাল বড় নদী পর্যন্ত খনন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এমপি। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও চলনবিলের কৃষকের স্বপ্ন পানির নিচে পচছে।
সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, অসময়ে অতি বর্ষণে ও উজানের ঢলের পানিতে চলনবিলের কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ। এটা একটি প্রাকৃতি দুর্যোগ। আমরা সকলেই সর্তক রয়েছি। আর এই বিষয়ে আগামী রোববার মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ জেলা ও উপজেলার সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সভা আহবান করা হয়েছে।
সিংড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ শারমিন সুলতানা বলেন, অত্র উপজেলাতে ৩৮হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ও অতি বর্ষণে উপজেলার ১০ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ও ৫০ হেক্টর জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ডাহিয়া ইউনিয়নের দুটি খালে বৃষ্টির পানি ফুসে উঠে চলনবিলের কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর জমির ধান ৮০ভাগ পাকলেই আমরা ধান কেটে নিতে কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি।
স/অ