চবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে কথা কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন বিজয় এবং সিএফসি গ্রুপ। বুধবার বিকেলে খেলার মাঠে সিএফসি কর্মী শামীম আজাদকে মারধর করে বিজয়ের কর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলে বিজয়ের তিন কর্মীকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করে সিএফসির কর্মীরা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দিয়েছে বিজয় পক্ষের নেতাকর্মীরা।

আহতরা হলেন- বিজয় পক্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের আবু বক্কর সিদ্দিক, আইন অনুষদের একই বর্ষের অপূর্ব, গণিত বিভাগের রাওফান এবং সিএফসি পক্ষের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শামীম আজাদ। এদের মধ্যে আবু বক্কর সিদ্দিকের হাতে ও পায়ে গুরুতর জখম হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুটি পক্ষই শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিজয় পক্ষের নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, চবি ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হকের রুবেলের নির্দেশে জামাতি স্টাইলে আমাদের এক ছোট ভাইয়ের ওপর হামলা করেছে সিএফসির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় জড়িতদের রাত ৯টার মধ্যে আটক করার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম আমরা। প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার অবরোধ ডাক দিয়েছি আমরা। একই সঙ্গে রেজাউল হক রুবেলকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি। ছাত্রলীগ থেকেও তাকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।

আর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল সমকালকে বলেন, এখানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে। আমি কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত না। যারা আমার বহিষ্কার দাবি করছে তারা প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিকল্পিতভাবে মারামারি করছে।

এর আগে বিকেলে অধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন সংলগ্ন একটি খাবারের দোকানে বগিভিত্তিক সংগঠন সিক্সটি নাইন পক্ষের দুই কর্মীকে মারধর করে রেড সিগন্যাল পক্ষ। আহতরা হলেন- সিক্সটি নাইন পক্ষের নাট্যকলা বিভাগের মার্স্টাসের মাহফুজুল হুদা লোটাস ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মার্স্টাসের মুকুল আহত হন। দুই পক্ষই চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

এরপর দোষীদের আটকের দাবিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটক ও শহরগামী শাটল ট্রেন প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা। শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন শত শত শিক্ষার্থী। পরে প্রক্টর দোষীদের বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে আটকের আশ্বাস দিলে তারা শাটল ও মূল ফটক ছেড়ে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান সমকালকে বলেন, এখন পরিস্থিতি আপাতত শান্ত। হলগুলোতে তল্লাশি চলছে। সবপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।

হাটহাজারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম সমকালকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি আপাতত শান্ত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত ফোর্স রাখা হয়েছে।