চট্টগ্রামেও হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: ঢাকার গুলশান ও কিশোগঞ্জের শোলাকিয়ার মতো চট্টগ্রামের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা বিদেশি নাগরিকদের ওপর বোমা হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের।

বিশেষ করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিল-কারখানায় কর্মরত বিদেশি নাগরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর জঙ্গিরা হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল। এ মাসের মধ্যে এই হামলার ছক কষছিল তারা।

গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড এলাকা থেকে আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পারে পুলিশ। তবে তাদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সেই হামলার সব পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেয়ার দাবি পুলিশের।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। সীতাকুণ্ডের একটি কারখানা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর বড় ধরনের হামলা চালাতে চেয়েছিলেন তারা।

গ্রেপ্তারের পর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে বাড়বকুণ্ড এলাকার একটি বাড়ি থেকে চারটি চাপাতি, চারটি কিরিচ, একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব ও পাঁচটি মোবাইল সেটসহ সরকারবিরোধী অডিও, ভিডিও উদ্ধার করা হয়। আটটি চাপাতি ও তলোয়ার উদ্ধার করা হয়।

তারা হলেন- মুসয়াব ইবনে উমায়ের ওরফে পিকলু দাশ (২৫), মো. খোরশেদুল আলম (৩২), ফয়সাল হোসেন শিপন (২৪) ও রাসেল মোহাম্মদ ইসলাম (৪০)। পটিয়ার বাসিন্দা ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক পিকলু দাশ দু’বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন।

পুলিশ বলছে, তাদের কাছে উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা জঙ্গিদের কাছে পাওয়া অস্ত্রগুলোর মতোই। গ্রেপ্তার জঙ্গিরা স্বীকার করেছে তারা টার্গেট করা ব্যক্তিকে কুপিয়ে মারার জন্য এসব চাপাতি ব্যবহার করতেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আগে থেকেই ওই চারজনের গতিবিধি নজরদারি করা হচ্ছিল।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ (উত্তর) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার সকালে বাংলামেইলকে বলেন, ‘রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পর চট্টগ্রামেও বোমা হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিল কারখানায় কর্মরত বিদেশি নাগরিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর জঙ্গিরা হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল।’

খুব শিগগিরই চট্টগ্রামে এ হামলার পরিকল্পনার ছক কষছিল জঙ্গিরা, এমনটাই দাবি করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘তারা যদি গ্রেপ্তার না হতো তাহলে চট্টগ্রামে খুব শিগগরই বড় ধরনের হামলা চালাতো।’ গ্রেপ্তার করার পর তাদের সব পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে চট্টগ্রামে আরো আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য থাকতে পারে এবং তারাও যাতে বড় ধরনের কোনো হামলা না করতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখছে পুলিশ। সেই সঙ্গে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা জিজ্ঞসাবাদে আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য এবং জসিম উদ্দিন রাহমানির অনুসারী বলে জানিয়েছে। তাদের ইতোমধ্যে আদালতের মাধ্যমে পাঁচদিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। এখন জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে আরো তথ্য আদায় করা হবে বলে জানান তিনি।

সূত্র: বাংলামেইল