সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ৫৪ হাজার ৪৮৯টি পরিবারের ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৪৫ জন মানুষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা এ তথ্য জানান।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্রগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে। এজন্য এর আগেরদিন সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছিল।
জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে উপকূলীয় ৩১ উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫৪ হাজার ৪৮৯টি পরিবারের ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৪৫ জন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ’
ঘূর্ণিঝড়ে ১৯ হাজার ৯২৯টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৩৯ হাজার ৫৯৯টি ঘরবাড়ী আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় এক হাজার ৫৯২ একর জমির পানের বরজের ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গোলাম মোস্তফা।
এ ঘূর্ণিঝড়ে ছয়জন মারা গেছেন জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘এর মধ্যে কক্সবাজারে চারজন এবং রাঙ্গামাটিতে দুইজন মারা গেছেন। কক্সবাজারে রহমত উল্লাহ (৪৫), সায়েরা খাতুন (৬৫), আব্দুল হাকিম (৬৫) ও শাহীনা আক্তার (১০) মারা গেছেন। রাঙ্গামাটিতে জাহিদা সুলতানা (১৪) ও হাজেরা বেগম (৪০) মারা গেছেন। ’
তিনি বলেন, ‘বিধান অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ছয়জনের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। ’
ঝড়ে মোট ৬১ জন আহত হয়েছেন জানিয়ে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এর মধ্যে কক্সবাজারে ৬০ জন এবং রাঙ্গামাটিতে একজন রয়েছেন। ’
ঘূর্ণিঝড়ের সময় সরকারের ১১ হাজার ৮২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৯ জন আশ্রয় নেন বলেও জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব।
গোলাম মোস্তফা জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা উপলক্ষে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এবং রাঙ্গামাটি জেলায় এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব জেলায় এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজার জেলায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নির্মাণের জন্য বুধবার (৩১ মে) কক্সবাজারে ৩০০ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আরও সহায়তা করব। অবস্থা বুঝে আহতদেরও আমরা সহযোগিতা করব। ’
সচিব গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, ‘সব জেলা প্রশাসকদের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। যেখানে যা দরকার আমরা সেই সাহায্য তাদের দেব। আমরা সবাই সব সময় তাদের (ক্ষতিগ্রস্তদের) সাথে আছি। ’