‘গ্রীক দেবী’র জায়গা হলো সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে থেকে সরানো ভাস্কর্যটির জায়গা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট -এর এনেক্স ভবনের সামনে।

হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামপন্থী দলের দাবির মুখে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভাস্কর্যটি অপসারণ করার পর থেকে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় এনেক্স ভবনের পেছন দিকে রাখা হয়েছিল।

গ্রীক দেবী থেমিসের আদলে গড়া ন্যায়বিচারের প্রতীক ভাস্কর্যটি অপসারণ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী, সংস্কৃতি কর্মী এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।

শনিবার রাতে ভাস্কর্য স্থাপনের কাজ তদারকি করেন ভাস্কর মৃণাল হক নিজেই।

 

বিক্ষোভের সময় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবারও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

আদালতের এনেক্স ভবন এলাকায় ভাস্কর্যটি স্থাপন করার সময় সেখানে ছিলেন এর নির্মাণ শিল্পী ভাস্কর মৃণাল হক। তিনি ভাস্কর্য পুন:স্থাপন কর্মকাণ্ড এবং স্থাপনের পরের ছবি সামাজিক মাধ্যমেও দিয়েছেন।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার পর তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

প্রতিবাদের মুখে ভাস্কর্য তো সরিয়ে নেয়ার প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলাকে মৃণাল হক বলেছিলেন, “এটা করতে হচ্ছে, কারণ অনেক প্লাস-মাইনাস, হিসেব-নিকেশের ব্যাপার আছে।

ভাস্কর্য সরানোর পর রাজু ভাস্কর্য চত্বরে সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা

২০১৬ সালের শেষ দিকে গ্রীক দেবী থেমিসের আদলে গড়া ন্যায়বিচারের প্রতীক এই ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বসানো হয়েছিল। ভাস্কর্যটি অপসারণের জন্য হেফাজতে ইসলাম দাবি জানিয়ে আসছিল।

হেফাজতে ইসলামের সমর্থকরা ঢাকায় বিক্ষোভ করে এবং রোজা শুরুর আগে এটি সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেয় সরকারকে।

সংগঠনটির আমির আহমদ শফি এক বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, “গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করে বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যে আঘাত করা হয়েছে”।

সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ভাস্কর্য সরানোর ব্যাপারে তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।

গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল

 

এই প্রেক্ষাপটে ভাস্কর্যটি সরানো হলে তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একে ঘিরে তীব্র প্রতিক্রীয়া দেখা যায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও মিছিল করার চেষ্টা করে প্রতিবাদকারী কিছু মানুষ। তবে পুলিশ জল কামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।