গ্রামে গ্রামে যুদ্ধের ভয়, সবার চোখ সীমান্তে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কাশ্মীর হামলা নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাক নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গ্রামগুলোতে সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তান। বসে নেই ভারতও।

পাল্টা জবাব দিতে কাশ্মীরে অতিরিক্ত ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে দেশটি। এতে গ্রামে গ্রামে যুদ্ধের ভয়-আতঙ্ক বিরাজ করছে। সীমান্তের দিকেই চোখ রাখছেন বাসিন্দারা।

বাইনোকুলার দিয়ে সীমান্তবর্তী সেনা ঘাঁটিগুলোর তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করছেন। শনিবার আলজাজিরা বিশেষ এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।

নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে ছাকোথি গ্রাম। কয়েক দশক ধরে এখানে বসবাস করে আসা নাবিলা শাহিন (৪০) বলেন, ‘যে কোনো মুহূর্তে গোলাগুলি-মর্টার নিক্ষেপ শুরু হতে পারে। সব সময়ই আতঙ্কের মধ্যে আছি।’ আতঙ্ক তৈরি হওয়ারই কথা। কারণ পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের এ পর্যন্ত চারবার যুদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭১ ছাড়া বাকি তিনটি যুদ্ধ কাশ্মীরকে ঘিরেই। ২০০৩ সালে দু’দেশের মধ্যে সীমান্তে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবুও উভয় দেশ বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে। ২০১৭ সালে শাইনি বেগমের বাড়িতে একটি মর্টার আঘাত হানে।

তিনি জানান, ‘এরপর থেকে ভয় আরও জেঁকে বসেছে। সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হলেই আতঙ্কের মধ্যে থাকি।’

৬১ বছর বয়সী স্কুল শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন, ‘গোলাগুলি শুরু হলেই বিপদ। আপনি বাইরে বের হতে পারবেন না। বাজারঘাট বন্ধ থাকবে। খাদ্য সরবরাহ বন্ধ থাকবে। অল্পস্বল্প কিছু পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে তা কিনতে হবে। পরিবারকে রক্ষা করতে নিজ বাড়ির পাশেই একটি বাঙ্কার তৈরি করেছেন তিনি।’

শ্রমিক মেহমুদ আহমেদ (৩০) বলেন, ‘অন্তরের গভীর থেকে ভয় অনুভব করছি। আমার বাড়িতে কোনো বাঙ্কার নেই, সেটা বানানোর সক্ষমতাও আমার নেই।’

শাহিন জানান, ‘বাঙ্কার তৈরি করতে দামি একটি ষাঁড় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। এটি তৈরিতে প্রায় ২ লাখ পাকিস্তানি রুপি খরচ হয়েছে। তবু এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি।’