‘গোপনে বিয়ে করা স্ত্রীকে’ পার্কে নিয়ে হত্যা, ছাত্রলীগ নেতার আত্মসমর্পণ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

ঝালকাঠি শহরের বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গোপনে বিয়ে করা স্ত্রী সায়মা পারভীন তানহাকে (২০) ছুরিকাঘাতে হত্যা করে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আলী ইমাম খান অনু আত্মসমর্পণ করেছেন। স্ত্রীকে হত্যা করে নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেন।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঝালকাঠি শহরতলীর ইকোপার্কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সায়মা পারভীন তানহা ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি শহরের ফকিরবাড়ি সড়কের শাহাদাত তালুকদারের মেয়ে।

হত্যাকারী আলী ইমাম খান অনু (৩০) ঝালকাঠি শহরের ফকিরবাড়ি এলাকার দলিল লেখক দিলদার হোসেন নান্নার ছেলে। তিনি ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

ঝালকাঠি থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন সরকার ও আত্মসমর্পণ করা আলী ইমাম অনুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনু ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর গোপনে বিয়ে করেন প্রেমিকা প্রতিবেশী সায়মা পারভীন তানহাকে। বিয়ের পরে তারা আলাদাভাবে যার যার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। সম্প্রতি মেয়েটি ফেসবুকে অন্য এক যুবকের সঙ্গে চ্যাটিং করতেন। বিষয়টি জানতে পেরে অনু রোববার রাতে নিজের ফেসবুকে স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত লিখে স্ট্যাটাস দেন। সোমবার বেলা ১১টার দিকে স্ত্রীকে ফোনে ইকো পার্কে ডেকে নেন অনু। এরপর ফেসবুকের স্ট্যাটাস ও চ্যাটিং নিয়ে দুইজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে অনু ছুরি দিয়ে স্ত্রীর পেটে ও বুকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তানহার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর পর অনু তার ফেসবুকে বেলা ১২টার দিকে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে স্ট্যাটাস দিয়ে ঝালকাঠি সদর থানায় এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ ঘাতক অনুকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ ও ছুরি উদ্ধার করে।

অনু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘আমার বউ পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছিল, তাই নিজেই তাকে খুন করেছি। এজন্য আমি ছাড়া আর কেউ দায়ী নয়।’

অপর একটি স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘বিশ্বাস ঘাতক বেইমানের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। পরপারে ভালো থেকো বউ- পরকীয়ার মজা এইবার অন্তত বুঝলা।’

সায়মা পারভীনকে তানহার বাবা শাহাদাত হোসেন তালুকদার বলেন, আমি বিয়ের বিষয়ে কিছু জানি না। ঘাতক অনু আমাদের বাসার কাছেই বসবাস করে। সে আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই অনু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অনুকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সূত্র: যুগান্তর