গোদাড়াীতে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, এবার ছাত্রী অপহরণ

অভিযুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার। পুরনো ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রকে তুলে নিয়ে গিয়ে ইটভাটায় জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনকারী কিশোর গ্যাং লিডার মেহেদী পালাশের বিরুদ্ধে এবার স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা গোদাগাড়ী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অপহৃত স্কুলছাত্রী আগে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার ওই এসএসসি পরীক্ষার্থীর চাচাতো বোন। তিনি উপজেলার মহিষালবাড়ি মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবার দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অপহৃত ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে উপজেলার লস্করহাটি গ্রামের আনসার আলী ছেলে গোদাগাড়ী মডেল থানার তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং লিডার মেহেদী পলাশ (২২) প্রেম-নিবেদনসহ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। তার প্রস্তাবে না সাড়া দিলে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। এই বিষয়টি অপহৃত ছাত্রী তার বাবা-মাকে জানালে অপহরণকারী মেহেদী পালাশ ও তার বাবা-মাকে অবগত করে রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতে নিষেধ করে।

তারপরও কিশোর গ্যাং লিডার ও অপহরকারী মেহেদী পলাশ বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলো। গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) ওই ছাত্রী উপজেলার পুরাতন জেনারেল হাসপাতারে সামনে থেকে প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফেরার পথে শাহ্ সুলতান (রহ.) কামিল মাদ্রাসার সামনে পৌঁছলে বিকেল ৫ টার দিকে মেহেদী পলাশ তার বাবা আনসার আলী, মা জহুরা বেগম এবং লস্করহাটি এলাকার মৃত ডাবলুর ছেলে আনসার আলীসহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজনের সহযোগিতায় প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এই বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, যার বিরুদ্ধে ছাত্র অপহরণের অভিযোগ উঠেছে সে থানার একজন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। কিশোর গ্যাং লিডার হিসেবেও এলাকায় তার কুখ্যাতি রয়েছে। যতুটুকু জানি তার মা জহুরা বেগমও একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার মায়ের নামে মাদক মামলা থাকায় ওয়ারেন্টের আসামি হিসেবে গত ২২ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়। পুনরায় তারা জামিনে এসে একই কারবার চালাচ্ছে। মেহেদী পালাশ ও তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রী অপহরণের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আসামিদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখ্য, এর আগে অপহৃত ছাত্রীর চাচাতো ভাইকে অপহরণ করে ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করে মেহদী পলাশ ও তার দলবল। গত ৭ সেপ্টেম্বর ওই ঘটনায় মেহেদী পলাশ, কিশোর গ্যাং লিডার রবিউল আওয়াল, শাহরিয়ার জয়, জাহিদ হোসেন, তারেক হাসান, সগরসহ আরো কয়েকজন জড়িত ছিল। ওই ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় তিনজন গ্রেপ্তার হলেও পরে তারা জামিনে বেরিয়ে যায়।

এএইচ/এস