গোদাগাড়ীর বিধবা শিল্পীসহ বিশটি পরিবার পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহার

শামসুজ্জোহা বাবু,গোদাগাড়ীঃ
৬ মাস আগে হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলাধীন পাহাড়পুর গ্রামের ৩০ বছর বয়সী আলফাজ বাবু তার চার সন্তানের জননী শিল্পিকে রেখে। পরিবারে মাথা গুজার ঠাই নেই ঠিকমত সবার । আলফাজ বাবু বাবার এক মাত্র সন্তান হওয়ায় বৃদ্ধ বাবার কাধেঁ  ভার পড়ে ৫ মেয়ে,স্ত্রীসহ ছেলের পুুুুরো পরিবার।  বয়সের ভারে নিজেই স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারে না।  এমনিতেই মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই তারপরে সংসার চলবে কিভাবে এই চিন্তায় প্রায় অচল হয়ে গেছে রজব আলী।  এইতো গত বছরই বর্তমান সরকার জমি আছে গৃহ নাই প্রকল্পে তাকে একটি টিনের ঘর করে দেই।
এই সংসারের বোঝা টানতে গিয়ে  শিল্পী বেগম এর বড় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর পর্যন্ত পড়াশোনা করে আর লেখাপড়া চালাতে পারেনি। তিন মেয়ে এক ছেলে নিয়ে পরের বাড়িতে কাজ করে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছিল শিল্পী বেগম। এ অবস্থায় খড়ের ঘরে শুয়ে পাঁকা ঘর নির্মাণের স্বপ্ন কোন দিন দেখেনি শিল্পি বেগম। করণ বিধবা দরিদ্র নারীর ছিল না স্বপ্ন পূরনের সামর্থ। সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে ভবিষ্যতে যে একটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে পারবেন তারও কোন সম্ভাবনা ছিলো না তার। অবশেষে বিনামুল্যে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে বিধবা দরিদ্র এই নারীর।
তার না দেখা স্বপ্ন পূরণ করেছে আওয়ামীলীগ সরকার। আড়াই লক্ষ টাকা ব্যয়ে উপজেলার ২০ টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে দুই কক্ষ বিশিষ্ট দুর্যোগ সহনীয় এই বাসগৃহের মধ্যে একটি শিল্পী বেগমের পরিবারের।
রোববার সকাল ১০ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে ডিজিটাল পদ্ধতিতে একযোগে দেশের  গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূটির বিশেষ বরাদ্দের অর্থ দিয়ে তৈরি গৃহহীন মানুষের জন্য ১১ হাজার ২৭৩টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর অংশ হিসেবে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার উপকারভোগী ২০ টি পরিবারের মাঝে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহের চাবি হস্তান্তর করে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইমরানুল হক।
ঘরের চাবি পেয়ে শিল্পীর শশুর রজব আলী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বেটি শেখ হাসিনা  আমাদের ঘর দিয়েছেন। আমরা কোনদিন পাকা ঘর চোখে দেখতে পাইতাম না। পাকা ঘর পেয়ে আমরা অনেক খুশি। আল্লাহ যেন হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখে শেখ হাসিনাকে।
শিল্পী বেগম বলেন, আমার অভাবের সংসারে ঘর তো দূরের কথা ঠিকমত খাবার জুটে না। পরের বাড়ীতে কাজ করে যখন সংসার চলে না তখন বেশীর ভাগ বাপ ভাইয়ের বাড়ী চইলা যাই। মেয়েটাকে পড়াইতে পারনুনা আর পাকা বাড়ী চিন্তাই করতাম না। অভাবের  কারনে কুড়ে ঘরটিই ঠিক করতে পারিনি। ছেলে মেয়ে নিয়ে একটি কুড়ে ঘরেই কষ্ট করে কাটিয়েছি। পাকা ঘর পেয়ে শিল্পী বেগম আরও বলেন, আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের মত গরিবদের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখে।
উপজেলার  প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবু বাশির জানান, প্রায় ৪০০ বর্গফুটের প্রতিটি ঘরে দুটি কক্ষ, একটি করিডোর, একটি বাথরুম ও একটি রান্নাঘর রয়েছে। দুর্যোগ সহনীয় ঘরগুলো টেকসই এবং প্রতিটি ঘরে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
স/অ