গোদাগাড়ীতে মা-বোনকে পিটিয়ে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে মা ও বোনকে পিটিয়ে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে অন্যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন আশি বছরের বৃদ্ধা মা ও তার মেয়ে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে একবার বাড়িতে ওই মা-মেয়েকে তুলে দেওয়া হলেও পরে আবারো একই কায়দায় বাড়িছাড়া করে নজরুল নামের ওই ব্যক্তি। ফলে উপায়ান্তর না দেখে এবার ভাই নজরুলসহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের বিরুদ্ধে রাজশাহীর আদালতে মামলা করেছেন বোন সায়েরা বেগম। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত দ্রুত ওই মা-মেয়েকে তাদের বাড়িতে আশ্রয় দানের জন্য আসামিদের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই আদেশও মানেননি আসামিরা। ফলে বাড়িছাড়া মা সাইফুন বেওয়া ও তাঁর স্বামীহারা মেয়ে সায়েরা বেগম এখন মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী সায়েরা বেগম তাঁর মায়ের সঙ্গে উপজেলার কুঠিপাড়া গ্রামে বসবাস করেন। তারা যেখানে বসবাস করেন সেই জমিটি ওই এলাকার মৃত এহিয়া খানের। এহিয়া খান দীর্ঘদিন আগে তাঁর জত-জমি দেখভালের জন্য ওইখানে বসবাস করতে সায়েরা বেগগমের বাবা সোলায়মানকে ঘর করে দিয়েছিলেন। সেই থেকে সোলায়মানের পরিবার ওই জমিতে বসবাস করে আসছেন। সোলায়মান মারা যাওয়ার পরে সেখানে তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানরা বসবাস করেন। এরই মধ্যে সম্প্রতি সোলায়মানের এক ছেলে নজরুল ইসলাম তার মায়ের বসবাসকৃত ঘরটি দখলের চেষ্টা করে আসছে। এই উদ্দেশে নজরুল তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের দিয়ে গত বছরের ২৭ জুলাই মা সাইফুন বেওয়া ও বোন সায়েরা বেগমে মারপিট করে বাড়িছাড়া করে। এরপর থেকে তারা যেন ওই বাড়িতে না উঠতে পারেন, এর জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল নজরুল ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা।
বাদীর অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে এর আগেও প্রশাসনের দপ্তরে ঘুরেছেন। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মাঝে একবার বৃদ্ধা সাইফুন বেওয়া ও তাঁর মেয়ে সায়েরা বেগমকে তাদের ঘরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারো জোর করে বাড়িছাড়া করা হয় তাঁদের।

বাদী সায়েরা বেগমের বলেন, ‘আমার মা বয়সের ভারে এখন চলতেও পারে না। তাকে এখন কে আশ্রয় দিবে। তাকে দেখ-ভালের জন্য আমি আমার বাবার বাড়িতেই থাকি। কিন্তু মাসহ আমাকেও মারপিট করে জোর করে বাড়িছাড়া করেছে আমাদের ভাই নজরুল এবং তার সহযোগীরা। এর জন্য আমরা প্রশাসনের দুয়ারে ঘুরেছি বার বার। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। তাই ভাইয়ের বিচার চেয়ে শেষে মামলা করেছি।’
তবে নজরুল ইসলাম দাবি করেন, ওই সম্পত্তি এখন তাঁর। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে তাঁর বোনের সঙ্গে ঝামেলা হলেও মাকে তিনি মারপিট করেননি। কিন্তু মা ওই বোনের পক্ষ নেওয়ায় দু’জনের কাউকেই তিনি আর বাড়িতে আশ্রয় দেননি।
জানতে চাইলে গোদাগাড়ী থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে মাকে মারার কোনো ঘটনা ঘটেনি। নজরুল ইসলাম রাগান্বিত হয়ে তার বোনকে মেরেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে। আবার তারা স্থানীয়ভাবেও মীমাংসার চেষ্টা করছে। কিন্তু নজরুলের মাকে দ্রুত বাসায় আশ্রয় করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

স/আর