গোদাগাড়ীতে মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার র‌্যাব সদস্যরা

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় মাদক কারবারিদের হামলার শিকার হয়েছেন র‌্যাব-০৫ এর সদস্যরা। এতে একজন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে শেষ পর্যন্ত র‌্যাব সদস্যরা তিন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছেন। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

গ্রেপ্তার তিন মাদক কারবারি হলেন- গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর ডিমভাঙা মহল্লার নুরুজ্জামান কাজলের সৎ ছেলে শাহরিয়ার নাজিম ওরফে জয় (২১), বুজরুক রাজারামপুর হলের মোড় এলাকার কবিরুল ইসলঅমের ছেলে পরশ ওরফে মাহিদ হাসান (১৯) এবং সিঅ্যান্ডবি গড়ের মাঠ এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে তারেক মাহফুজ (১৯)।

সূত্র জানায়, জয়ের মা আমেনা বেগম মুক্তিও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মুক্তির প্রথম স্বামী শহিদুল ইসলামের ছেলে জয়। মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় মুক্তির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করেন শহিদুল। পরে মতিউর রহমান মতি নামে গোদাগাড়ীর এক মাদক ব্যবসায়ীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মুক্তি। মতি র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এরপর গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগের নেতা নুরুজ্জামান কাজলকে বিয়ে করেন মুক্তি। কিছু দিন আগে একটি মাদক মামলায় কাজল, মুক্তি ও জয়কে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। সম্প্রতি তাঁরা জামিনে বের হন। তারপর আবার র‌্যাবের কাছে মাদকসহ গ্রেপ্তার হলেন জয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিজয়নগর এলাকা থেকে জয়সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১৭৭ বোতল ফেনসিডিল, একটি ধারালো চাপাতি এবং একটি খেলনা পিস্তল। র‌্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার মারুফ হোসেন খানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল এ অভিযান চালায়। এ অভিযানেই হামলার শিকার হয় র‌্যাব।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ফেনসিডিল বিক্রির জন্য মাদক ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা অভিযানে যান। তখন চারজন দুটি বস্তা ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। র‌্যাব সদস্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে পরশ তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে কনস্টেবল মো. রোকনুজ্জামানের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করেন। তা প্রতিহত করতে গেলে রোকনুজ্জামানের একটি আঙ্গুল কেটে রক্তাক্ত জখম হয়। আর জয় তার কোমর থেকে একটি খেলনা পিস্তল বের করে একজন র‌্যাব সদস্যের মাথায় ধরে বলেন, ‘গুলি করে দিব’। এভাবে তারা ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও র‌্যাব সদস্যরা তিনজনকে ধরে ফেলে। অন্য একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

ঘটনার পর আহত র‌্যাব সদস্য রোকনুজ্জামান গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় র‌্যাবে কর্মরত উপ-পরিদর্শক ত্রিনিবাস মিস্ত্রি বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তাদের হেফাজতে মাদক রাখা, সরকারি কাজে বাধা দান, র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিন আসামিকেও গোদাগাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এএইচ/এস