গোদাগাড়ীতে গলা কেটে অটোচালক হত্যার তিন আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গত ৭ জানুয়ারি অটোরিকশা চালক জমিস উদ্দিন জয়কে (২০) গলা কেটে হত্যার দায়ে তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের হতে শুরু করেছে বলে জানায় পুলিশ। হত্যার মাত্র ৩দিনের মাথায় আজ শুক্রবার সকালে আরএমপি’র আওতাধীন শাহমখদুম থানা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এদিকে নিছক অটোরিকশা চুরির উদ্দেশ্যেই চালককে মাদক সেবন করানোর পর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে থানা কর্তৃপক্ষ।

নিহত জয় রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম এলাকার আরফান আলীর ছেলে। অন্যদিকে আসামি জসিম উদ্দিন একই এলাকার আবুল কালামের ছেলে। অন্য দুই আসামি হলো গোদাগাড়ী থানার মাটিকাটা এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে সুমন আলী এবং একই এলাকার মরিফুল ইসলামের ছেলে রাজিব আলী।

শাহমখদুম থানার ডিসি হেমায়েতুল ইসলাম জানান, সন্দেহ করা হচ্ছে গ্রেপ্তারকৃত চক্রটি বহুদিন থেকেই আটোরিকশা চুরির সাথে জড়িত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই প্রমাণ মিলেছে। তিনি আরো জানান, আসাামিরা নিজেদের পাশাপাশি অটোচালকে মাদক সেবন করায় যাতে তাদের এই অমানবিক কাজটি করতে বেগ পেতে না হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি রাজশাহী মহানগরী থেকে নিহত অটোচালক জয় তার অটো নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পরেরদিন নিহতের আত্মীয় শাহমখদুম থানায় তার নিখোঁজের জিডি করে। থানা কর্তৃপক্ষ গত ১০ জানুয়ারি গোদাগাড়ী থানাধীন জলাহার গ্রামের কার্বের মোড়ের পাশে একটি পুকুরের ধারে জঙ্গলে গলাকাটা অবস্থায় জয়ের দেহ উদ্ধার করে। এসময় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে গোদাগাড়ী থানার মাটিকাটা গ্রামের রাজিব আলীকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাজিবের দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে অপর দুই আসামী জসিম উদ্দিন (২৩) ও সুমন আলী (২৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুইজন রাজশাহী নগরীর তৃপ্তি নামক একটি হোটেলে কাজ করতো।

রাজিব আলীর দেয়া তথ্য মতে, আসামি জসিম ও সুমন নিহত জয়ের অটোতে করে গোদাগাড়ীতে আসে এবং রাজিবকে মাদকদ্রব্য নিয়ে আসতে বলে। রাজিব তাদেরকে মাদক সরবরাহ করলে, তারা ঘটনাস্থলে বসে মাদক সেবন করে। এসময় আসামীরা নিহত জয়কেও মাদক খাওয়ায়। একপর্যায়ে সন্ধ্যা নামায় রাজিব চলে আসলে জমিস ও সুমন অটোচালক জয়কে জঙ্গলের কাছে নিয়ে যায়। এসময় আসামী সুমন মাদকাসক্ত অটোচালক জয়ের পাদুটো চেপে ধরে ও অপর আসামী জসিম অটোচালকের গলায় ছুরি চালায়। তবে ঘটনাক্রমে মাদক সরবরাহকারী সেই রাজিব আবার ঘটনাস্থলে ফিরে আসলে সে সমস্ত ঘটনা দেখে ফেলে। পরে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেলে আসাামিরা লাশটি জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে আসে।

এসময় জসিম ও সুমনের গায়ের রক্তমাখা পোশাক জসিম তার বাড়িতে নিয়ে এসে রাখে। আর চুরি করা অটোটি নাটোরে জসিমের দুলাভাইয়ের বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। তবে এতো কিছু করেও শেষ রক্ষা হয়নি আসামিদের। নিহত জয়ের অটোতে থাকা অপর এক বৃদ্ধ যাত্রীর তথ্যের ভিত্তিতে শাহমখদুম থানা কর্তৃপক্ষ আসামিদের গ্রেপ্তার করে।

স/শা