গেদাগাড়ীতে কোটি টাকার হেরোইন পাচারকালে পুলিশ সদস্য গ্রেফতার 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌর এলাকার রেলগেট মোড় থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুল্যের  ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ নুর মোহাম্মদ ওরফে নবীউল ইসলামকে প্রথমে গ্রেফতার করেন রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (জেলা ডিবি) একটি দল। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সারাংপুর পুলিশ পাড়া থেকে আরও ৫০০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করা হয়েছে নবীউলের দুই সহযোগী মাদক সম্রাট মিঠুন আলি (৩২) ও রবিউল ইসলামকে (৩৩)। গ্রেফতারের পর রাতেই  তাদেরকে রাজশাহীতে জেলা ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ কনস্টেবল নবীউল ইসলাম মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এই খবর জানার পর রাজশাহী মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ কনস্টেবল নবীউল ইসলামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন।

পুলিশ কনস্টেবল নুর মোহাম্মদ নুর নবী ইসলাম (২৮) চাকরি করেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের  (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায়। পুলিশে চাকরির পাশাপাশি করছিলেন হেরোইনের ব্যবসাও।

রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ডিবির ওসি আব্দুল হাইয়ের নেতৃত্বে জেলা ডিবির একটি দল শনিবার দিনগত রাত সাড়ে আটটার দিকে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার রেলগেটের আলামিন মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টারের সামনে থেকে পুলিশ কনস্টেবল নুর মোহাম্মদ নবীউল ইসলামকে আটক করেন। দেহ তল্লাশি করে তার কাছ থেকে ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হেরোইনের মুল্য প্রায় কোটি টাকা বলে জানা গেছে।

এদিকে কনস্টেবল নবীউলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ জানতে পারেন পাচারের জন্য তার পার্টনার গোদাগাড়ীর শীর্ষ মাদক স¤্রাট মিঠুন আলীর পুলিশ পাড়ার বাসায় আরও হেরোইন মজুদ আছে। পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মিঠুন আলীর বাড়ি তল্লাশি করে তার শয়ন কক্ষ থেকে আরও ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেন। এ সময় মিঠুন আলী ও তার সহযোগী সারাংপুর গ্রামের রবিউল ইসলামকেও গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই।
জানা গেছে, মাদকসহ গ্রেফতার হওয়া পুলিশ কনস্টেবল নুর মোহাম্মদ ওরফে নবীউল ইসলাম পৌর এলাকার সারাংপুর পুলিশ পাড়া মহল্লার আবুল কাশেমের ছেলে। অন্যদিকে মিঠুন আলী  সারাংপুর জোতগোসাই গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন ও রবিউল ইসলাম সারাংপুর পুলিশ পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তারা একযোগে মাদক পাচারের কাজ করছিলেন।

জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, পুলিশ কনস্টেবল নবীউল ইসলাম অপর দুই সহযোগীর সঙ্গে অংশীদার ভিত্তিতে ভারত থেকে  হেরোইন আনিয়ে দেশের ভেতরে  পাচারের কাজ করছিল। অধিকাংশ মাদকই পুলিশ কনস্টেবল নবীউল বহন করতেন। পুলিশ পরিচয়ে সে নিরাপদে মাদক পাচারের কাজ করে আসছিল। রোববার সকালে গোদাগাড়ী থানায়  ৩ জনকে  সোপর্দ করে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছে ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা।