গাজীপুরে প্রবেশপত্র পায়নি এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গাজীপুর কিংস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে দু’দিন ধরে লাপাত্তা থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুল শাখার ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের তালাবদ্ধ রেখে রোববার রাত থেকে সুপারও উধাও।

অভিভাবক রাশিদুল ইসলাম জানান, তার শ্যালিকা জেমি আক্তারসহ চারজন এবার কিংস কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা। তাদের মধ্যে একজনকে কসমিক কলেজ থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে প্রবেশপত্র সরবরাহ করলেও অন্যদের কোনো প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি।

ফলে তারা সোমবার শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। একই কথা জানান, স্থানীয় বাড়িয়া ইউপি সদস্য মো. রাসেল ভূঁইয়া। দু’দিন আগে তার শ্যালক ওই কলেজের ছাত্র আবু বকর ও তার এক সহপাঠীর কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র দেয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েছে।

এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনার জন্য সর্বশেষ রোববার রাতে তাদের দু’জনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে লাপাত্তা রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ দেওয়ান মাহমুদুল হাসান রাজন।

তাকে মোবাইল ফোন করলেও রিসিভ করছেন না। অনেক সময় মোবাইলটিও বন্ধ করে রাখছেন। সোমবার প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে অফিসে ও ক্লাসরুমে তালাবদ্ধ দেখতে পান। বাইরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও অফিস বন্ধ দেখতে পেয়ে ফিরে গেছেন।

হোস্টেলটির সুপার মো. ফরিদও রাতে চা-পানের কথা বলে রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের ভেতরে রেখে তালা আটকে রহস্যজনকভাবে সোমবার দুপুর পর্যন্ত লাপাত্তা ছিলেন। রাসেল ভূঁইয়ার মতো কয়েক অভিভাবক প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে ওই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন এবং সাংবাদিকদের জানান।

হোস্টেল সুপার ফরিদুল ইসলাম জানান, তার এক আত্মীয়ের অসুখ থাকায় তিনি রাতে তালা আটকে চাবিটা তার বিছানার নিচে লুকিয়ে রেখে গেছেন। কিন্তু হোস্টেলে অবস্থানরত দুই পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে রাতে হোস্টেলের গেটের তালা আটকে দেয়।

সুপার ফরিদ একবার বলেন- সোমবার সকালে কাজের বুয়া ওই তালা খুলে রান্না করে গেছেন, আবার বলেন- সোমবার দুপুরে গিয়ে জানতে পারি শিক্ষার্থীরা ওই তালা ভেঙে ফেলেছে। ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অবনী সাহা জানায়, ক্লাসরুম ও অফিসে তালাবদ্ধ দেখে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

সোমবার ক্লাস বন্ধ থাকার ব্যাপারে আমাদের আগে কোনো নোটিশও দেয়া হয়নি। অবনী সাহা আরও জানায়, তার মামা সঞ্জয় দাসেরও সোমবার এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে সোমবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।

তার কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র সরবরাহের কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিলেও তাকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি। স্কুল (দিবা) শাখার শিক্ষক মাহমুদা সুলতানা জানান, সোমবার সকালে ক্লাস নিতে গিয়ে তার মতো অন্য সহকর্মীরাও ক্লাসরুম ও অফিস রুম বন্ধ দেখতে পান। বন্ধ থাকার বিষয়টি তারা অবগত নন। আগে নোটিশও দেয়া হয়নি। তবে একাধিকবার অধ্যক্ষকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলেন। তদন্তে ঘটনা সঠিক প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যুগান্তর