সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গ্রীক অর্থোডক্স চার্চ ও অ্যাংলিকান হাসপাতালে হামলায় কষ্ট পেয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাত চলছে।
আর এই সংঘাতের মধ্যেই সম্প্রতি গাজার গির্জা ও হাসপাতালে হামলার ঘটনা ঘটে। রোববার (২২ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে গাজার গ্রীক অর্থোডক্স পোরফিরিয়াস চার্চ এবং গাজার একটি অ্যাংলিকান হাসপাতালে হামলার জন্য তিনি দুঃখিত বলে রোববার জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।
তিনি বলেন, ‘আমি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তার খোঁজ রাখছি। (চলমান সংঘাতে হতাহতদের প্রতি) আমি আমার বিশেষ বেদনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে যারা আটক রয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। আমি গাজার গুরুতর মানবিক পরিস্থিতির কথা ভাবছি। গাজার অ্যাংলিকান হাসপাতাল এবং গ্রীক অর্থোডক্স গির্জা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হামলার শিকার হয়েছে, এটা আমাকে কষ্ট দেয়।’
পোপ আরও বলেন, ‘আমি অবরুদ্ধ ভূখণ্ডকে উন্মুক্ত করার জন্য, মানবিক সহায়তার বিতরণ অব্যাহত রাখার জন্য এবং বন্দিদের মুক্ত করার জন্য আমার আবেদন পুনর্ব্যক্ত করছি।’
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনির অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। ওই এক হামলায় একসঙ্গে ৫০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরে জানানো হয় হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৭১ জন।
আল-আহলি আরব নামের ওই হাসপাতালটিতে অসংখ্য আহত ও অসুস্থ মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এছাড়া দখলদার ইসরায়েলিদের হামলা থেকে বাঁচতেও অনেক মানুষ ‘নিরাপদ আশ্রয়’ ভেবে হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়েছিলেন।
গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত সরকার হাসপাতালের ওপর এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। অবশ্য ফরেনসিক এবং পরিস্থিতিগত নানা প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল সেখানে বিমান হামলার দায় অস্বীকার করে আসছে।
আনাদোলু বলছে, ঐতিহাসিক কারণে গাজার এই হাসপাতালটি ব্যাপটিস্ট হাসপাতাল নামে পরিচিত। এটি ১৯৮০ এর দশকের শুরু থেকে অ্যাংলিকান চার্চ বা চার্চ অব ইংল্যান্ডের অধীনে ছিল।
এছাড়া গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাজা শহরের গ্রীক অর্থোডক্স পোরফিরিয়াস চার্চে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। রাতের সেই হামলায় চার্চটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত ও আরও অনেকে আহত হন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ কুদরা পরে জানান, গির্জায় ইসরায়েলের সরাসরি ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান রয়েছেন।
ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছিল, বোমা হামলার ফলে চার্চ স্টুয়ার্ডস কাউন্সিলের ভবন সম্পূর্ণ ধসে পড়ে। সেই ভবনে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবার – তাদের মধ্যে খ্রিস্টান এবং মুসলিম উভয়ই ছিল – ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের মধ্যে গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিল।