শনিবার , ৪ জুন ২০২২ | ২৪শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

গরমে মাথা গরম হওয়ায় বাড়ে বন্দুক হামলা, দাবি মার্কিন গবেষকদের

Paris
জুন ৪, ২০২২ ৯:০৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান বন্দুক সহিংসতার পেছনের কারণ হিসেবে অদ্ভুত এক ব্যাখ্যা দিয়েছে দেশটির পুলিশ বিভাগ। তাদের প্রচলিত বক্তব্য, ‘গরমে মাথা গরম হয়ে যায়। এ সময় বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে খুনিরা।’

আবহাওয়া ও অপরাধের মধ্যে যোগসূত্র থাকার বিষয়টি একেবারে নতুন নয়। এরকম যোগসূত্রের কথা আগেও বলেছেন অপরাধবিজ্ঞানীরাও। শনিবার প্রকাশিত এএফপির প্রতিবেদন মার্কিন পুলিশ দপ্তর সেই পুরানো তত্ত্বটিই আবার নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিল।

যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা ৩২ কোটি ৯০ লাখ। আর নাগরিকদের হাতে বন্দুকসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা ৩৯ কোটি ৩০ লাখ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের চেয়ে বন্দুক বেশি।

অন্য এক হিসাব বলছে, দেশটিতে চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ৩ জুন পর্যন্ত (৫ মাসে) ২৭০ বন্দুক হামলা হয়েছে। শুধু আগ্নেয়াস্ত্রের কারণেই দেশটিতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ নিহত হন। গড়ে প্রতিদিন নিহত হন প্রায় ১০০ জন। অর্থাৎ কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই বন্দুক হামলা হচ্ছে। কখনো কখনো একই দিনে ২-৩ রাজ্যে।

হাভার্ড টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথের স্বাস্থ্যনীতিবিষয়ক অধ্যাপক ডেভিড হেমেনওয়ে বলেন, ‘চার পাশে কেউ না থাকলে কাউকে গুলি করাটা কঠিন। এ কারণে খারাপ আবহাওয়ায় বন্দুক সহিংসতার ঘটনা কম হয়।’

২০২০ সালে ডেভিড হেমেনওয়ে ও তার স্নাতক পর্যায়ের ছাত্র পল রিপিং শিকাগো শহরের অপরাধমূলক ঘটনা নিয়ে গবেষণা করেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালে শিকাগো শহরের অপরাধপ্রবণ ঘটনাগুলো তাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শিকাগো ট্রিবিউনে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে দৈনিক বন্দুক সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে আবহাওয়ার তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের গতি, তাপমাত্রার যোগসূত্র নিয়ে গবেষণা করা হয়। ওই গবেষণায় দেখা যায়, ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রায় ৩৪ শতাংশ বেশি বন্দুক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ছুটির দিন ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ৪২ শতাংশ বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গবেষকেরা আরও বলছেন, গড়ে ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেশি থাকলে বন্দুক সহিংসতা ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি ঘটে। শুধু গ্রীষ্মকালে গরম পড়লেই যে এমনটা ঘটে, তা নয়।

শীতকালে যেসব দিন তুলনামূলক বেশি উষ্ণ থাকে, সেসব দিনেও এরকম অপরাধের ঘটনা বেশি ঘটে। ফিলাডেলফিয়ার অপরাধমূলক ঘটনা নিয়েও একই রকম গবেষণা করেছেন ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক লিয়া সিচিনাসি।

২০১৭ সালে জার্নাল অব আরবান হেলথে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে সিচিনাসি ও সহলেখক ঘাসান হামরা বলেন, বেশি গরম মাসগুলোয় সহিংস ঘটনা বেশি ঘটেছে। মে থেকে সেপ্টেম্বর মাস ছিল বেশি গরমের দিন। আর এ সময়টাতেই এসব সহিংস ঘটনা বেশি ঘটেছে। অক্টোবর থেকে এপ্রিলে শীতের সময় এ ধরনের সহিংস ঘটনা কম ঘটেছে।

এই দুই গবেষক বলেন, ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার তুলনায় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১৬ শতাংশ অপরাধ বেশি হয়েছে। এএফপিতে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের পরপরই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে মরু অঞ্চল বা আফ্রিকার দেশগুলোতে কেন যুক্তরাষ্ট্রের মতো এমন প্রতিদিন বন্দুক হামলা হয় না? অস্ত্র বাণিজ্যই কি যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক অবক্ষয়ের বড় কারণ?

গবেষণা বলছে, মার্কিন আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতারা ২০০০ সাল থেকে গত দুই দশক ধরে বাণিজ্যিক বাজারের জন্য প্রায় ১৪ কোটি বন্দুক তৈরি করেছে। দেশটি আমদানি করেছে আরও সাত কোটি ১০ লাখ বন্দুক। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতার অ্যাসল্ট রাইফেল, যা ৫০০ ডলারে পাওয়া যায়। ৯ মিলিমিটার পিস্তল যা নির্ভুল নিশানাসহ ব্যবহারে সহজ এবং স্বয়ংক্রিয় ট্রিগার পাওয়ারসমৃদ্ধ, এর দাম ২০০ ডলারেরও কম।

সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক