সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
মিসরে কপটিক খ্রিস্টানদের ওপর হামলার পর সেনাবাহিনী ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে’ অভিযান চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি। মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শুক্রবার মধ্য মিসরের মিনিয়া প্রদেশে কপটিক খ্রিস্টানদের বহনকারী একটি বাসে বন্দুকধারীরা হামলা চালায়। এতে অন্তত ২৮ জন নিহত হন। আহত হন আরও ২৫ জন। তখন দুটি বাস ও একটি ট্রাকে করে স্থানীয় কপটিক খ্রিস্টানরা প্রার্থনার জন্য সেন্ট স্যামুয়েল আশ্রমে যাচ্ছিলেন।
মিসরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, ওই হামলার পর লিবিয়া সীমান্তের নিকটবর্তী দেরনা শহরে ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে’ অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী।
শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে মিসরের প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, তার বাহিনী ‘যে কোনও স্থানে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালাতে পিছপা হবে না’। তিনি বলেন, ‘আমি জনগণের সুরক্ষার জন্য যে কোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’ তিনি এ সময় জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন।
মিসরের সামরিক সূত্রে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, মিসরের কপটিক খ্রিস্টানদের ওপর হামলায় লিবিয়ার জঙ্গিরা জড়িত বলে তারা ধারণা করছেন।
এখনও ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনও সংগঠন। তবে এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) কপটিক খ্রিস্টানদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ২০১৫ সালে জঙ্গিরা ২১ জন কপটিক খ্রিস্টানের শিরশ্ছেদ করে। তখন দেরনার নিকটবর্তী এলাকায় আইএসের সন্দেহভাজন আস্তানায় অভিযান চালিয়েছিল মিসরের সেনাবাহিনী।
২০১১ সালে লিবিয়ায় ইঙ্গ-মার্কিন আগ্রাসনে দেশটির স্বৈরশাসক মিয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটির বেশিরভাগ এলাকা বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে আইএসের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতিও রয়েছে।
উল্লেখ্য, মিসরের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ খ্রিস্টান। জঙ্গি সংগঠনগুলো প্রায়ই খ্রিস্টানদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে থাকে। গত এপ্রিলে পাম সানডে উৎসব চলার সময় তান্তা আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের বিভিন্ন গির্জায় দুটি আলাদা বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হন। এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কায়রোর বৃহত্তর কপটিক ক্যাথেড্রোলে বোমা হামলায় ২৫ জন নিহত এবং ৪৯ জন আহত হন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন