সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
শুধু জোড়া ধর্ষণই নয়। ভারতের বাবা রাম রহিম গুরমিত সিং অভিযুক্ত জোড়া খুন এবং বলপূর্বক লিঙ্গচ্ছেদেও। সিরসায় তাঁর আশ্রমে অনাচার সহ্য করতে না পেরে অনেক সাধুই পালাতেন। তাঁরা যাতে সংসারে ফিরতে না পারেন লিঙ্গচ্ছেদ করা হতো আগেই। ডেরার বহু সাধুই এর শিকার। প্রতিবাদী বা অবাধ্য সাধুদের বিশেষ করে টার্গেট করা হতো। লিঙ্গচ্ছেদের পরে খোজা সাধুদের হারেম পাহারা দেওয়ার কাজে লাগানো হতো।
সিরসায় ডেরার ভিতর হাজার একর জমির উপর আছে এক শীশমহল। মুখে মুখে সবাই বলে বাবা কি গুফা। দামী আসবাবসজ্জিত এই গুফায় থাকতেন গুরমীত রাম রহিম সিং। তাঁর সেবায় নিয়োজিত বাছাই ২০০ সাধ্বী।
সাদা পোশাকের এই সেবিকারা রাম রহিমের সেবা যত্ন করতেন। এরকম দুই সাধ্বীকে ধর্ষণ করেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন গুরমিত। নির্যাতিতাদের মধ্যে একজন তাঁর প্রাক্তন সহকারীর বোন। তিনিই চিঠি লিখেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে প্রতিকার চেয়ে। তবে বাবা কি গুফায় ঢোকার অনুমতি আছে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের কাছে।
সব দিক দিয়েই বিলাসী জীবন ভালোবাসেন গুরমিত। তাঁর জামার জন্য আছে আলাদা ডিজাইনার। চুলের জন্য আলাদা হেয়ার ড্রেসার। কনভয়ে ১০০ থেকে ৮০০টা গাড়ি। আশ্রমের ভিতরেও বাবা ঘোরেন ব্যাটারিচালিত কার্টে।
ডেরা সচা সৌদার আশ্রমকে কেল্লার ছোট সংস্করণই বলা যায়। কী নেই! বিস্তীর্ণ কৃষিজমি‚ হোটেল, সিনেমা হল, স্কুল, রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল, স্টুডিও, কারখানা, পেট্রোল পাম্প, ছাপাখানা মজুত সবই। বাইরেও ডেরার অগাধ প্রতিপত্তি। সিরসায় আছে একটি বাজার। যা বানিয়েছে ডেরা সচা সৌদা। সব দোকানের নাম শুরু সচ দিয়ে। বিক্রি হয় এমএসজি বা মেসেঞ্জার অফ গড ব্র্যান্ডের হাজারো জিনিস। নিজেকে ওই নামেই পরিচয় দেন গুরমিত রাম রহিম।
রোজ তাঁর বাণী শুনতে আশ্রমে সমবেত হন ৩০ হাজার লোক। কয়েক মিনিট বলেন রাম রহিম। তারপর ডিজে মিউজিক বাজায়। এই আশ্রমেই কদিন আগে বসেছিল মিউজিক্যাল কনসার্ট। পাশাপাশি‚ উদযাপিত হয়েছিল রাম রহিমের ৫০ তম জন্মদিন। ৪২৭.২৫ বর্গফিট কেকের উপরে দেড় লক্ষ মোমবাতি জ্বালিয়ে।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে একটি খবর সামনে এসেছে। সেখানে জানা যাচ্ছে রাম রহিমের দর্শন পেতে এসেছিলেন এক দম্পতি। অভিযোগ‚ স্ত্রীকে সাধ্বী করে রেখে দেওয়া হয়েছে আশ্রমে। ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বামীকে। যতবারই গেছেন‚ বলা হয়েছে তাঁর স্ত্রী সমাধিতে আছেন। ঠিক সময়ে ফিরবেন।
ডেরার এই অন্ধকার দিক নিয়ে ‘পুরা সচ‘ পত্রিকায় লিখে মৌচাকে ঢিল মেরেছিলেন রামচন্দ্র ছত্রপতি। এর মাশুল তাঁকে দিতে হয় প্রাণ দিয়ে। শোনা যায় তাঁকে যিনি তথ্য ও খবর দিয়েছিলেন সেই সাধুর নাম রঞ্জিত। অভিযোগ‚ দুজনকেই শার্প শ্যুটার দিয়ে হত্যা করান রাম রহিম। সেই মামলা এখনও চলছে। সুবিচারের আশায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
– ইন্টারনেট