খেলোয়ার নয়, লন্ডনে স্টেডিয়াম কিনতে চায় কে এই শাহিদ খান?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ফুটবলের অন্যতম বিখ্যাত স্টেডিয়াম লন্ডনের ওয়েম্বলিকে ৯০ কোটি পাউন্ড দামে কিনে নেয়ার প্রস্তাব দিয়ে হঠাৎ করেই আলোচনায় এসেছেন পাকিস্তানি-আমেরিকান ব্যবসায়ী শাহিদ খান।

অবশ্য এ প্রস্তাব এখনো গ্রহণ করেনি ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা এফএ, এবং কোনো চুক্তিও হয়নি।

শাহিদ খান বলেন, আট সপ্তাহের মধ্যেই এ চুক্তি করা সম্ভব এবং তাহলে এখানে ফুটবল ছাড়াও আমেরিকান ফুটবল খেলা হতে পারবে। ওয়েম্বলিতে ২০০৭ সাল থেকেই এনএফএলের কিছু খেলা হচ্ছে।

কিন্তু কে এই শাহিদ খান?

তিনি একজন কোটিপতি ব্যবসায়ী, যার মোট সম্পদের পরিমাণ ৭২০ কোটি ডলার এবং ফোর্বস ম্যাগাজিনের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী বিশেষ শীর্ষ ধনীদের মধ্যে তিনি ২১৭তম।

অবশ্য ইংলিশ ফুটবলে শাহিদ খান এখন আর ততটা অপরিচিত নন।

কারণ, তিনি ২০১৩ সাল থেকে ফুলহ্যাম ফুটবল ক্লাবের মালিক। এই ফুলহ্যাম ক্লাব কয়েক বছর আগেও প্রিমিয়ার লিগে খেলত। এখন অবশ্য তারা রেলিগেটেড হয়ে নেমে গেছে এর নিচের স্তরে, যেটাকে বলে চ্যাম্পিয়নশিপ। তবে এ বছর তারা হয়তো প্রিমিয়ার লিগে প্রমোশন পেতে পারে।

শাহিদ খানের জন্ম পাকিস্তানের লাহোরে। তিনি ১৯৬৮ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।

সেখানে তিনি প্লেট ধোয়ার কাজ করে পড়ার খরচ জুগিয়েছেন। তার আয় হতো প্রতি ঘণ্টায় ১ ডলার ২০ সেন্ট করে। এরপর তিনি গাড়ি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৭৮ সালে গাড়ির বাম্পার তৈরির কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

সেখান থেকেই তার সাফল্যের শুরু। ২০১২ সালে এক হিসেবে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে দুই-তৃতীয়াংশ গাড়ির বাম্পারই এখন তৈরি হয় শাহিদ খানের কারখানায়।

পরে তিনি আমেরিকান ফুটবল দল জ্যাকসনভিল জাগুয়ার্সের মালিক হন ২০১২ সালে।

তিনিই প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু আমেরিকান হিসেবে একটি ফুটবল ক্লাবের মালিক হন, যা তিনি কিনেছিলেন ৭৬ কোটি ডলারে।

পরের বছর তিনি ইংলিশ ফুটবল ক্লাব ফুলহ্যাম কিনে নেন মিশরীয় ধনী মোহাম্মদ আল-ফায়েদের কাছ থেকে।

তবে এত টাকার মালিক হলেও তিনি আমেরিকায় বৈষম্যের হাত থেকে রেহাই পাননি।

১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর শাহিদ খানকে ব্যবসায়িক সফরের সময় বহুবার পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থামিয়েছে।

একবার কানাডা যাওয়ার সময় তাকে ৬ ঘণ্টার জন্য জেলেও কাটাতে হয়েছিল।

পাকানো গোঁফধারী ৬৮ বছর বয়স্ক শাহিদ খান এখন হয়ে যেতে পারেন ফুটবলের অন্যতম নামী স্টেডিয়াম ওয়েম্বলির মালিক।

ইংলিশ ফুটবলের ঐতিহ্যগত ‘হোম’ হচ্ছে এই ওয়েম্বলি।

বছর দশেক আগে পুরনো ওয়েম্বলি ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং এখন এটি ৯০ হাজার আসনের অত্যাধুনিক এক স্টেডিয়াম।

এই স্টেডিয়াম একজন আমেরিকান ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির খবরকে সবাই যে স্বাগত জানিয়েছেন তা নয়।

এর পক্ষে-বিপক্ষে এখন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে।