খুঁড়িয়ে চলছে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর স্কুল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে সরকারের পক্ষ থেকে আদিবাসীদের শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলার যাদুরাণী বাজারে স্কুলটি নির্মাণ করা হয়। তবে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে ৫৩ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান। নেই পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থাও। ফলে ব্যাহত হচ্ছে আদিবাসীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টিতে ছোট ছোট দুটি কক্ষ রয়েছে। কক্ষের চারদিকে ইটের দেওয়াল এবং ছাউনি টিনের। একটিতে পড়ানো হয় প্রাক-প্রাথমিকের ২৩ জন শিশুকে আর অন্যটিতে প্রথম শ্রেণির ৩০ শিশুকে। জায়গার অভাবে গাদাগাদি করে বসতে হয় তাদের।
এই স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কনক মুর্মূ বলেন, ‘আমরা খুশি যে মেয়েটি স্কুলে যাচ্ছে। সরকার যেমন স্কুলের উদ্যোগ নিয়েছে, আশা করি তাদের ওপরে তোলার দায়িত্বও তারা নেবেন। কিন্তু উপবৃত্তি না পাওয়ায় মেয়ের খরচ চালানো আমার জন্য কঠিন।’
বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষক চিন্তামণি মুর্মূ বলেন, ‘এত শিক্ষার্থীর মাঝে একজন শিক্ষকের পাঠদান করানোটা অনেক কঠিন। তাছাড়া দু’টি মাত্র রুম, জায়গার সংকটে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসতে হয়। এতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’
বিদ্যায়ের সভাপতি সনিরাম হেমরম জানান, উপজেলার ৯টি আদিবাসী গ্রামের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভাষায় শিক্ষার সুযোগসহ প্রাথমিকের গণ্ডি পেরুবে— এ আশায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারিভাবে উপজেলা প্রাথমিক অফিস থেকে পাঠ্যবই দেওয়া হলেও নেই উপবৃত্তির ব্যবস্থা। এ ছাড়া স্কুলটিতে মাত্র দুটি কক্ষ। আর মাত্র একজন শিক্ষক থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টিতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে পর্যাপ্ত বরাদ্দ আর আরও বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে এ অঞ্চলের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে তা ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম জে আরিফ বেগ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অর্থায়নে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে মাসে তিন হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়।’
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ‘যে শিশুরা জন্মের পর থেকেই শিখে আসে পশু-পাখি শিকার, মাছ শিকার। তাদের বিদ্যালয়ের অনুশাসনের মধ্যে আনা সহজ ব্যাপার নয়। তাই তাদের মূলধারার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আনার জন্য আরও বেশি উদ্যোগ প্রয়োজন। আরও বেশি বরাদ্দ প্রয়োজন।’