খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণকারীরা মানুষ হত্যাকারীদের চেয়েও ভয়ঙ্কর

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণকারীরা আগুণ দিয়ে মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চেয়েও ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, যারা খাদ্যে ভেজাল মেশায় তারা আগুণে পোড়ানো রাজনীতির চেয়েও ভয়ংকর, হত্যাকারীর চেয়েও ভয়ংকর। তারা ক্ষমাহীন অপরাধ করছেন বলেও জানান তিনি।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে খাদ্যে ভেজাল এই ব্যবস্থা চলছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। তাহলে কেন এখন খাদ্যে ভেজোলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো না। আমাদের পাশ্ববর্তি দেশ ভারতেও ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন অভিযান চলে। আমাদের এখানেও চলবে। তিনি আরো বলেন, মানুষ যখন খাবার গ্রহণ করে, তখন তারা বিশ্বাস নিয়ে গ্রহণ করে যে একটি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করছি। কাজেই ভেজাল মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। একইভাবে খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ চলবে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি বলেন, যারা খাদ্যে ভেজাল মেশায়, তারা সন্তানকে হত্যার আয়োজন করে, স্বজনকে হত্যা করার জন্য ব্যবস্থা কওে, এমনকি নিজেকেও হত্যার ব্যবস্থা করছে। যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় তারা আগুনে পোড়ানো রাজনীতির চেয়ে ভয়ংকর। মানুষ হত্যা করার চেয়ে ভয়ংকর। মুনাফা লোভী ওই ব্যবসায়ীদেও কোন ধরণের ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আ্সন্ন রমজান মাসে দয়া করে অহেতুক দাম বাড়াবেন না। প্রয়োজন ছাড়া কোন জিনিসের দাম বাড়াবেন না। খাদ্যে ভেজাল দেবেন না। রমজান মাসে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকলেই সহশীল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে এ বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত অর্থাৎ তিন বছর সাত মাসে (৪৩ মাস) সারাদেশে খাদ্যে ভেজালবিরোধী চার হাজার ৫০৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। মামলা করা হয়েছে সাত হাজার ৬৫০টি। এতে দণ্ডিত ব্যক্তির সংখ্যা সাত হাজার ৫৬২ জন। এ সময়ে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে পাঁচ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ টাকা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মাদক এবং জঙ্গিবাদ নির্মূলের মতো খাদ্যে ভেজাল নির্মূলেও সারাদেশে অভিযান জোরদার করা হবে। খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ রোধে জিরো টলারেন্স প্রদর্শন করা হবে। শুধু ভেজাল নয় নিরাপদ ও পুষ্টিসম্মত খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।

সংবাদ সম্মেলনে আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পারিনি মন্তব্য করে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমাদের মৌলিক অধিকারের প্রথম বিষয়টি খাদ্য। তাই আমাদের দরকার নিরাপদ খাদ্য। এখন আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য। নিরাপদ খাদ্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যারা খাদ্যে ভেজাল মেশান তাদের বলতে চাই, এ ব্যাপারে আইনের প্রয়োগ কঠোর করা হবে। পাশাপাশি যারা খাদ্য কেনেন তাদেরও সচেতন হতে হবে।