ক্ষেতলালে হাটের জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে প্রভাবশালীদের স্থাপনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট:
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর চার মাথা হাটের জায়গা দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইটের তৈরি স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই হাটের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও তা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন প্রভাবশালীরা। নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণের ফলে হাটের জায়গা দিনদিন সংকুচিত হয়ে আসায় বর্তমান হাটটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের দু’পার্শ্বে বসছে। যানবাহনসহ পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি উপজেলার শিবপুর চার মাথা হাটের নামে ৩০ শতাংশ জমি শর্ত সাপেক্ষে লিখে দেন। তৎকালীন উপজেলা পরিষদের সাধারণ সভায় হাটটি সায়রাতভূক্ত করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহিত হলে স্থানীয় প্রশাসন হাটের নিচু জায়গায় সরকারি বরাদ্দ দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ করেন। যথারীতি হাটের কার্যক্রম শুরু হয়। হঠাৎ করে শিবপুর গ্রামের প্রভাবশালী আলফাজ আলী ও রশিদুল নামে দুই ব্যক্তি ওই হাটের জায়গা ক্রয়সূত্রে নিজেদের দাবি করে ব্যবসায়ীদের অস্থায়ীভাবে নির্মিত প্রায় ৫০টি টিনের ঘর ও সেড ভেঙ্গে দেন। এরপর ওই জায়গায় ইট, বালু, রড ও সিমেন্ট দিয়ে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন অভিযোগ পেয়ে স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দেন। পরবর্তীতে নোটিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে হাটের জায়গার স্ব-পক্ষে কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসে আসতে বলা হয়। কিন্তু প্রভাবশালীরা প্রশাসনের কথা অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছেন। তাদের দাবি, গত ৬ বছর আগে শিবপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামান ওই জমি টাকার বিনিময়ে তাদের কাছে বিক্রি করেছেন। তাদের নামে কোবলা দলিল আছে। সে কারণেই তারা ওই জায়গার মালিক হয়ে নির্মাণ কাজ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হাটের আশপাশের স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের দেখাদেখি একই গ্রামের ইউছুফ, তোফাজ্জল হোসেন এবং পাশ্ববর্তী সুহলী গ্রামের আশরাফ আলীও হাটের জায়গা দখল করে বসতবাড়ী নির্মাণের কাজ করছেন। বর্তমানে তারা সকলেই ওই হাটের জায়গা নিজেদের দাবি করছেন।
শিবপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামান বলেন, শর্ত অনুযায়ী স্ট্যাম্প মূলে ওই জায়গা হাটের নামে লিখে দিয়েছিলাম বটে। কিন্তু সে শর্ত তারা ভঙ্গ করেছেন। বাধ্য হয়ে আমি ওই জায়গা বিক্রি করেছি। এ ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না।
আলফাজ ও রশিদুল বলেন, শিবপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামান গত ৬ বছর পূর্বে ওই জায়গা আমাদের দুইজনের নামে কবলা দলিল মূলে লিখে দিয়েছেন। মালিক মূলেই ওই জায়গা দখলে নিয়ে কাজ শুরু করেছি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, স্থানীয় তহসীলদারকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি আইনগত ভাবে নিষ্পত্তির জন্য তাদেরকে কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।

স/শা