ক্রেতার ভিড়ে মুখর যমুনা ফিউচার পার্ক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সকাল থেকেই গরম উপেক্ষা করে ঈদের কেনাকাটা করতে বেরিয়ে পড়েন নগরবাসী। রাজধানীর বিভিন্ন বিপণিবিতানে দেখা গেছে ক্রেতার বাড়তি চাপ।

তবে পছন্দের পোশাক কিনতে এ-মার্কেট ও-মার্কেট ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে ক্রেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্ক।

কারণ এখানে এক ছাদের নিচে নামিদামি সব ব্র্যান্ডের পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য কেনা যায়। রোববার নয়নাভিরাম এ শপিং মল ছিল ক্রেতার পদচারণায় মুখর।

সরেজমিন দেখা যায়, দিনভর ঢাকাসহ দূর-দূরান্তের মানুষ ছুটে এসেছেন যমুনা ফিউচার পার্কে। ক্রেতাদের লাইন ধরে শপিং মলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। অনেকে এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।

মলে ঢুকেই পছন্দের পোশাকসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ শপিং মলে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করে দিনশেষে বাড়ি ফিরেছেন ক্রেতারা। অনেকে আবার কেনাকাটা শেষ করে সপরিবারে ইফতারও করেছেন এখানে।

রাজধানীর উত্তরা থেকে মেয়েকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে আসেন জয়নুল আবেদিন। পছন্দের পোশাক কিনতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ঈদের কেনাকাটায় আমার প্রথম পছন্দ যমুনা ফিউচার পার্ক।

কারণ এখানে নামকরা সব ব্র্যান্ডের এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের অত্যাধুনিক সব পোশাক পাওয়া যায়। দামও হাতের নাগালে। এখানে উপযুক্ত দাম দিয়ে পছন্দের পোশাকটি কিনতে পেরে আমি খুশি।

শান্তিনগর থেকে আসা হাফিজা বলেন, ঈদের জন্য লং ড্রেস কিনেছি। সঙ্গে ম্যাচিং করে কিনেছি জুতাও। যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করে আলাদা আনন্দ। বিশাল আয়তনের এ শপিং মল, কোথাও কোনো ধাক্কাধাক্কি নেই, হুড়োহুড়ি নেই। স্বচ্ছন্দে পছন্দের পোশাক বাছাই করতে সুবিধা হয়।

সাভার থেকে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জামিল জানান, সপরিবারে ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে এসেছি। শপিং মলের আকার বড় হওয়ায় কেনাকাটা করতে খুবই ভালো লাগে।

তিনি বলেন, এখানে আরেকটা সুবিধা- নির্ধারিত দামে সব ব্র্যান্ডের পোশাক এক ছাদের নিচে পাওয়া যায়। আর পোশাকও অরিজিনাল। অন্য শপিং মলে নকল পোশাক কিনে প্রতারিত হওয়ার ভয় থাকে।

এদিকে ক্রেতাদের ঈদ আনন্দ আরও রঙিন করে তুলতে ‘কোটি টাকার ঈদ উপহার’ ক্যাম্পেইন চালু করেছে যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ।

এ অফারের আওতায় যমুনা ফিউচার পার্কের যে কোনো শোরুম থেকে মাত্র এক হাজার টাকার কেনাকাটা করে যে কেউ পেতে পারেন মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালঙ্কার, ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক আইটেমসহ নানা ধরনের পণ্য। এছাড়া প্রতিটি কেনাকাটার বিপরীতে ক্রেতারা নিশ্চিত উপহার পাবেন।

যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোটি টাকার ঈদ উপহার ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করতে ক্রেতাকে যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে এক হাজার টাকার কেনাকাটা করতে হবে।

এরপর গুগল প্লে স্টোর অথবা অ্যাপ স্টোর থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক অ্যাপ ডাউনলোড করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরপর কেনাকাটার বিবরণী দিলেই ক্রেতা তৎক্ষণাৎ নিশ্চিত উপহার পাবেন।

অন্যদিকে ক্রেতারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে গিফট পেতে পারেন, সেজন্য ওয়েস্ট কোর্টে গিফটের পৃথক বুথ করা হয়েছে। অ্যাপসে তথ্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা তার গিফট বুথ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। কোটি টাকার ঈদ অফার ক্যাম্পেইনের আপডেট তথ্য যমুনা ফিউচার পার্ক ফেসবুক পেজে(www.facebook.com/JFPbangladesh) জানা যাবে।

শপিং মলের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে প্রথম রোজা থেকে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। যা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত। ক্রেতা বেশি থাকায় বিক্রেতারাও খুশি।

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শপিং মল যমুনা ফিউচার পার্কের ডি-জোনের ‘জিন্স অ্যান্ড কো,’ শোরুম ঘুরে দেখা গেছে, হাল ফ্যাশনের নানা ধরনের ডেনিম জিন্স ও টেনসিল ফেব্রিক্সের পোশাক। এখানে ছোট ছেলেমেয়েদের পোশাক থেকে শুরু করে বড়দের পোশাক ডিসপ্লে করে রাখা হয়েছে।

শোরুমের দায়িত্বে থাকা মো. রাজিব সারোয়ার  বলেন, ঈদকে ঘিরে হাল ফ্যাশনের আধুনিক ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। সুলভমূল্য ও ভালোমানের পোশাক দিতে পেরে ক্রেতাদেরও ভালো সাড়া পাচ্ছি। তিনি বলেন, এ শোরুমে সব বয়সী মানুষের পোশাক রয়েছে।

এ শোরুমে ডেনিম প্যান্ট কিনতে আসা জাহিদ বলেন, পছন্দসই প্যান্ট পাওয়া যায় এখানে। ঠিক আমি যেমনটা চেয়েছি। মানও অনেক ভালো। তিনি আরও বলেন, সব সময় এখান থেকে প্যান্ট ও শার্ট নেয়া হয়। তাই এবারের ঈদেও এখান থেকেই প্যান্ট ও শার্ট নিতে এসেছি।

শপিং মলের আড়ং শোরুমের সেলস এক্সিকিউটিভ নাসিফ বলেন, এবার গরমে ঈদ হওয়ায় সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দিয়ে সব পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে। ছেলেদের ফরমাল শার্ট, ব্লকের সুতির শার্ট ও পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। পাঞ্জাবির ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে। প্রতিটি আইটেমেই মোগল কালচারের ছোঁয়া দেয়া হয়েছে।