ক্রয়মূল্যে ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসাব, শুরুতে সূচকের বড় লাফ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বিবেচনায় নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দেওয়ার পর বুধবার (৩ আগস্ট) লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় ঊর্ধ্বমূখী প্রবণতা দেখা গেছে।

এ দিন লেনদেনে অংশ নেওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনে বেশ ভালো গতি দেখা যাচ্ছে।

প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ১০০ পয়েন্ট বেড়ে গেছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আর লেনদেন হয়েছে ২৫০ কোটি টাকারও বেশি।

ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক।

শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছিলো। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সাড়া দেয়নি।

তবে আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হিসেবে আসার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তিনি গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৮ জুলাই বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দরের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণে ক্রয়মূল্যকে বাজার মূল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

এর আগে, শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দিলে গত বৃহস্পতিবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (দামের সর্বনিম্ন সীমা) বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এরপর রোববার (৩১ জুলাই) থেকে কার্যকর হয় এই ফ্লোর প্রাইস। দাম সমন্বয় করায় ওই দিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। আর লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। এতে টানা পতন থেকে বেরিয়ে একদিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১৫৩ পয়েন্ট।

পরের দিনও (সোমবার) শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতি প্রবণতা দেখা যায়। ওই দিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩০ পয়েন্ট বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন বেড়ে ৯১২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান।

আর মঙ্গলবার লেনদেনের শেষ দিকে শেয়ারবাজারে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজার দামের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে। এতে একদিকে লেনদেনের গতি বাড়ে, অন্যদিকে সূচকের বড় উত্থান হয়।

অবশ্য ওই দিন রাতেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়টি প্রকাশ হতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে আজ (বুধবার) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়তে দেখা যায়। এতে লেনদেনের আধাঘণ্টার মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ১০৩ পয়েন্ট।

এরপর সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০টা ৪৪ মিনিটে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৯৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৬টির এবং ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৮৩ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

অন্যদিকে, সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২০৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ১৫০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির।

 

সুত্রঃ জাগো নিউজ