শুক্রবার , ১ নভেম্বর ২০১৯ | ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ক্যাসিনো অভিযানের শেষ কোথায়?

Paris
নভেম্বর ১, ২০১৯ ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ক্যাসিনোকাণ্ডে তোলপাড় রাজনীতি। জুয়ার বোর্ড থেকে বেরিয়ে এলো হাজারো গল্প। সে গল্প দুর্নীতির। সে গল্প লুটেরার। মদ, নারী, অর্থপাচার সবই মিলল জুয়ার ঘরে। রাজনৈতিক কর্তৃত্বে বিলাসী যাপনের এক রঙমহল যেন রাজধানীর বার আর ক্লাবপাড়াগুলো।

আর চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের শুরু ঠিক এই ক্লাবপাড়া থেকেই। রাজনীতিক, ঠিকাদার, রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা যে জুয়ার আসরে মিলেমিশে একাকার, অভিযানে হানা ঠিক সেখানেই।

সরকার প্রধানের ইশারায় এই অভিযান, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অভিযানে পাকড়াও হচ্ছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতারাও। আর এতেই বাহবা মিলছে সরকার শিবিরে।

কিন্তু অভিযান নিয়ে প্রশ্ন আছে জনমনে। হঠাৎ কেন অভিযান, দুর্নীতির রাঘববোয়ালদের কী হবে, অথবা শেষ কোথায় এই অভিযানের- এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মানুষে মানুষে। ধন্দে আছেন বিশ্লেষকরাও।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, ‘একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আপনি সমাজের সব বিষয় তুলে আনতে পারবেন না। ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান, ভালো কথা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হচ্ছে! রাষ্ট্রের সকল ধরনের অব্যবস্থাপনাকে সামনে আনতে হবে। দুর্নীতির সার্বিক চিত্র সামনে আনতে হবে।’

তবে সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম মনে করেন, এই অভিযান অন্তকাল চলবে না। যতদিন দুর্নীতি থাকবে ততদিন অভিযান চলবে না। সরকার দুর্নীতি নির্মূলে বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Casino-2.jpg

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের মহাসড়কে যাচ্ছি মূলত কাগজে-কলমের হিসাবে। সাধারণ মানুষ সরকার-রাষ্ট্রের এই অব্যবস্থাপনার কথা জানতে পারছে না। আবার কেউ বললে সরকার তা গ্রহণ করতে পারছে না। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের চেয়ারপারসন হিসেবে প্রতি বছর দুর্নীতির চিত্র তুল ধরছি। আমরা যখন দুর্নীতির ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলি, তখন সরকার বলে যে আমরা কারও এজেন্ট হয়ে কথা বলছি। বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বিরোধিতা করছি। অথচ, তারা কেউ একজন সদিচ্ছা দেখায় না যে আসলে দুর্নীতির চিত্রটা কী? সরকারের অনেকে মনে করছেন, খুব উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু তাদের যখন বলা হচ্ছে আসলে এই এই হচ্ছে, তখন তারা খোঁজ নিতেই পারেন। বাধাটা কোথায়? মূলত তারা ভয় পান। আর এ কারণেই তারা মেনে নিতে চান না। ফলে অভিযান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’

সরকার জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বালিশ-পর্দার দুর্নীতি কোনো বিষয়-ই না। বালিশ-পর্দার চেয়ে ভয়ঙ্কর দুর্নীতির খবর আছে। সাংবাদিকরা ভয়ে সে খবর বের করছে না। একটি প্রকল্প ৯ মিলিয়ন ডলারে শেষ হবার কথা। তা বাড়িয়ে ১৩ মিলিয়ন ডলার করা হচ্ছে। প্রকল্পের অতিমূল্যায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পের মধ্যে উগান্ডা সফর রাখা হয়েছে। আজব! প্রকল্প শুরু না হতেই শত শত গাড়ি কেনা হয়। বিদেশে যাওয়া হয়। উন্নয়ন হচ্ছে না, তা বলছি না। কিন্তু দুর্নীতি সব ম্লান করে দিচ্ছে। চলমান অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্নও আছে। অন্তত সাধারণ মানুষ ভরসা পাচ্ছে কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ আছেই।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘ক্যাসিনো অভিযানের মধ্যে দিয়ে বের হয়েছে অনৈতিকতা। অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের মধ্য দিয়ে ভোগ-বিলাশের চিত্র বেরিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দলের মধ্য থেকেই সরকার অভিযান শুরু করেছে সরকার। অন্যকে শুধরাতে হলে নিজেকে আগে শুধরাতে হয়। প্রধানমন্ত্রী দলের মধ্যে শুদ্ধ অভিযান চালিয়ে সেটাই প্রমাণ করছেন। সমাজ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন দরকার। একজন মানুষের আসলে কত টাকা দরকার! একজন মানুষের আসলে কয়টা বিল্ডিং দরকার? অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মানুষ মরিয়া। এই প্রতিযোগিতা থামানো দরকার। আর অভিযানের মধ্য দিয়ে মানুষ যেন সেটাই উপলব্ধি করতে পারেন।’

 

 

 

সর্বশেষ - জাতীয়