কোরবানী করার কিছু নিয়ম কানুন

তোমার পরিক্ষার সফলকাম। আর তুমি তোমার সন্তাককে বুকে তুলে নাও আর জন্নাত থেকে পেরিত দুম্বাকে কোরবানী কর। আর তোমাদের পরবর্তীদের জন্য এ হুকুম অবধারিত করলাম। আর সে থেকেই কুরবানীর এই প্রচলন চলে আসছে, যা কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

কুরবানী করার কিছু নিয়ম কানুন:—- আল্লাহর উউদ্দেশ্যে তাকাওয়া অর্জন করার প্রধান মাধ্যম হলো কুরবানী করা।

আর এই কুরবানী করতে হবে হালাল এবং চতুষ্পদ প্রানীকে যেমন:-উঠ,দুম্বা,গরু,ছাগল,ভেড়া, এই গুলো গ্রহনযোগ্য এবং কুরবানীর প্রানী এমন ভাবে ক্রয় করতে হবে যেন এতে কোন খুত বা সমস্যা না থাকে। সবল হতে হবে, এবং জিবেহ করার সময় প্রথমে এই প্রণীর মাথাকে দক্ষিন দিকে পশ্চিম মুখী করে রাখতে হবে। কুরবানী করার সময় একটি দোয়া পাঠ করতে হবে।

দোয়াটি হলো বাংলা উচ্চারণ :-ইন্নী ওয়াজ জাহুতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতী ওয়াল আরদা হানীফা ও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন ইন্নী ছালাতি ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন লা শারিকালাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীন আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা। এর পর বিসমিল্লাহি আল্লাহাহি আকবার বলে জবেহ করতে হবে।

এর পর একটি দোয়া পড়তে হবে দোয়াটি হলো বাংলা উচ্চারণ :- আল্লাহুম্মা তাকাবলাহ মিন্নী কামা তাকাববালতা মিন হাবীবিকা মুহাম্মাদিন ওয়া খলীলিকা ইব্রাহিম সালাইহিস সালাতু ওয়া সালাম।

কুরবানী সম্পর্কীয় কতিপয় দায়িত্ব্য কর্তব্য :– (১) দশই জিলহজ্জ ঈদের নামাজের পর থেকে বারই জিলহজ্জ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কুরবানী করা যায়। তবে প্রথম দিন কুরবানী করা উত্তম। ঈদের নামাজের আগে কুরবানী করলে কুরবানী হবে না। এবং রাতের বেলা ও কুরবানী করা মাকরুহ। (২) কুরবানীর পশু ভেড়া, খাসী,দুম্বা বা এ জাতীয় অন্য কোন প্রানী হলে এটা একজনের নামেই কুরবানী করা যাবে। আবার যদি গরু, উঠ,বা মহিষ হয় তবে সাত জনের নামে কুরবানী করতে পারবে বলে শর্ত হল সকলের অংশই সমান হতে হবে। যদি কর কম বেশী হয় তবে কুরবানী জায়েজ হবে না। (৩) শরীকী কুরবানীর ক্ষেত্রে সকলের নিয়ত বিশুদ্ধ হতে হবে এবং সকলের হালাল পয়সা হতে হবে। যদি কোন একজন হারাম পয়সা বা গোশত ভক্ষনের নিয়তে কুরবানী করে তবে কারোরই কুরবানী হবে না।

(৪) কুরবানীর সাথে আকীকাও করা যাবে।এতে কোন অসুবিধা নেই। (৫)শরীক কুরবানীর ক্ষেত্রে পাল্লা দিয়ে মেপে গোশত বন্টন করতে হবে। যদি কারো কম বা বেশী হয় তবে কুরবানী কবুল হবে না। (৬) কুরবানীর গোশত তিন ভাগে ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য এক ভাগ আত্নীয় স্বজনের জন্য ও এক ভাগ ফকীর মিসকিনের জন্য রাখাটা মুস্তাহাব। (৭) কুরবানীর পশু দিয়ে চাষ বা অন্য কোন কাজ করা মাকরুহ। (৮) কুরবানীর চামড়া গরীব দুঃখীদের মাঝে বিতরন করে দেওয়া উত্তম। (৯)কুরবানীর পশু যদি বকরী, ভেড়া, বা দুম্বা হয় তবে কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে,যদি গরু বা মহিষ হয় তবে অন্তত : পক্ষে দুই বছরের হতে হবে। (১০) কুরবানীর পশু যদি অন্ধ বা লেংড়া বা শিং গোড়া থেকে ভাঙ্গা থাকে তবে এটা দ্বারা কুরবানী হবে না। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে তাকাওয়া অর্জন করার তৈফিক দান করুক।

মু. তামিম সিফাতুল্লাহ সাংবাদিক, লেখক, ইসলামিক চিন্তাবিদ। ছাত্র,মদীনাতুল উলুম কামীল মাদ্রাসা, রাজশাহী। E-mail:-tamim.sifatullah82@gmail.com