কেন এটা আউট নয়? বিস্মিত, হতাশ তামিম!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ব্যাটিং প্রান্তে ছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগ্যান। আর বল হাতে টাইগার ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ৩৬তম ওভারের ৪র্থ বলটি ড্রাইভ করলে মরগ্যান। অনন্য দক্ষতায় ঝাঁপিয় পড়ে ক্যাচটি তালুবন্দী করলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু একী! রিভিউ চেয়ে বসেছেন মরগ্যান। টিভি রিপ্লেতে বোঝা যাচ্ছিল নানা বলটি তামিমের তালুবন্দী হওয়ার আগে মাটি স্পর্শ করেছে কিনা। তাই হয়তো ‘বেনিফিট অব ডাউট’ পেলেন মরগ্যান। থার্ড আম্পায়ারের ‘নট আউট’ সিদ্ধান্তের পর বিস্মিত তামিম ছুটে গেলেন ফিল্ড আম্পায়ারের কাছে। নিজের স্বপক্ষে কিছু বলতে চাইলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত তো আর পরিবর্তিত হওয়ার নয়।

এই মুহূর্তে পরাজয়ের শঙ্কা ভর করেছে বাংলাদেশ শিবিরে। দ্রুত উইকেট পতন কিংবা দারুণ একটি স্পেল খুব জরুরী হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে একটি আউট নাকচ হয়ে যাওয়াটা ভালো বিষয় নয়। যদিও বল হাতে নেমে দলকে শুরুতেই আনন্দের উপলক্ষ এনে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ইংলিশদের দলীয় ৬ রানেই বিপজ্জনক জেসন রয়কে (১) মুস্তাফিজের দারুণ ক্যাচে পরিণত করেন ম্যাশ। কিন্তু দ্রুত সেই বিপদ কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়ায় ইংলিশরা। দ্বিতীয় উইকেটে জো রুট আর অ্যালেক্স হেলসের ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। বোলারদের বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেও সাফল্য পাচ্ছিলেন না মাশরাফি। এরপর সাব্বিরকে আনতেই ম্যাজিক! ৯৫ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাব্বিরের প্রথম ওভারের শেষ বলে বদলি ফিল্ডার সানজামুলের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হলেন হেলস।

বৃহস্পতিবার লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ৩০৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। একপ্রান্তে ধীরস্থির খেলতে থাকেন তামিম। অপর প্রান্তে আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বের হন সৌম্য। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ রান আসার পর ছন্দপতন! অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান ৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ২৮ রান করা সৌম্য। সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। তার ব্যাটে দেখা যায় শটের ফুলঝুড়ি। সঙ্গী হিসেবে অনেকদিন পর পান ইমরুল কায়েসকে। ভালোই খেলছিলেন ইমরুল। কিন্তু দলীয় ৯৫ রানে প্ল্যাঙ্কেটের বলে মার্ক উডের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তিনি। আউট হওয়ার আগে তিনি ২০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৯ রান করেন।

দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের প্রতিশব্দ হয়ে উঠছে ‘ধারাবাহিকতা’। নিয়মিত রান আসছে তার ব্যাটে। আজ ২ উইকেট হারানোর পর দলকে ভরসা দেন তিনি। প্ল্যাঙ্কেটকে সীমানাছাড়া করে ৭১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের ৩৭তম ফিফটি করেন। এরপর তার যোগ্য সঙ্গী হয়ে আসেন মি. ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে ইংলিশ বোলারদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ শুরু করেন। মুশফিক এদিন দেখা দেন বিধ্বংসী রূপে। ৪৮ বলে ৪ বাউন্ডারিতে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন। এরপরই ১২৪ বলে ১১ চার এবং ১ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৯ম সেঞ্চুরি পূরণ করেন তামিম।

অন্যাপ্রান্তে সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকটে জুটিতে এসে গিয়েছিল ১৬৬ রান। এরপরেই ছন্দপতন ঘটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। প্ল্যাঙ্কেটের বলে থামতে হয় তামিমকে। বাটলারের গ্লাভসবন্দী হওয়ার আগে তিনি ১৪২ বলে চার এবং ৩ ছক্কায় ১২৮ রান করেন। পরের বলে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিকুর রহিমও!  তার ৭২ বলে ৮ বাউন্ডারিতে গড়া ৭৯ রানের ইনিংসটি শেষ হয় হলসের হাতে ধরা পড়ে। এরপর যথারীতি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে ১০ রানেই সাজঘরে ফিরেন সাকিব। সাব্বির ১৫ বলে ২৪ রান করে দলের রান ৩০০ পার করতে অবদান রাখেন। মাহমুদ উল্লাহ ৬ এবং মোসাদ্দেক ২ রানে অপরাজিত থাকেন। সূত্র: কালের কণ্ঠ