কুস্তি ফেডারেশনের কর্তার বিরুদ্ধে ১০টি যৌন নিগ্রহের অভিযোগ কুস্তিগিরদের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দিল্লি পুলিশের বক্তব্য ছিল, কুস্তি ফেডারেশনের কর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। তাই তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। সাক্ষী মালিকেরা এ বার দু’টি এফআইআরে মোট ১০টি নিগ্রহের ঘটনার উল্লেখ করেছেন। সেখানে নির্দিষ্ট করে বলা আছে কোথায়, কখন, কাকে নিগ্রহ করেছেন ব্রিজভূষণ। সেখানে নাবালিকাকে নিগ্রহের অভিযোগও রয়েছে। তাঁরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে বক্তব্যও রেখেছেন। সেগুলিও এফআইআরে উল্লেখ করা রয়েছে।

২৮ এপ্রিল দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ব্রিজভূষণ মেয়েদের নিগ্রহ করেছেন। বিনিময়ে বাড়তি সুবিধা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। তিনি মেয়েদের শরীর অস্বস্তিকর ভাবে ছুঁয়েছেন বলে এফআইআরে লেখা হয়েছে। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ৩৫৪, ৩৫৪এ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। একটি এফআইআরে বলা হয়েছে ছ’জন প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগিরের কথা। দ্বিতীয়টিতে এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগিরের বাবা অভিযোগ করেছেন ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক মহিলা কুস্তিগিরের অভিযোগ, ছবি তোলার নাম করে তাঁর শরীর ছুঁয়েছেন ব্রিজভূষণ। নিজের শরীরের দিকে জোর করে টেনে নিয়েছেন। তাঁর কাঁধ এবং বুকে হাত দিয়েছেন ইচ্ছাকৃত ভাবে। সেই কুস্তিগির জানিয়েছেন যে, কোনও রকম শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। অভিযোগ, তবুও তাঁকে বার বার উত্ত্যক্ত করেছেন ব্রিজভূষণ।

প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগিরদের অভিযোগ:

প্রথম জন: অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ তাঁর সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর বুকে, পেটে হাত দেন বলে অভিযোগ। তিন-চার বার এমন করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা কুস্তিগির। নিজের অফিসে ডেকেও তাঁর অনুমতি ছাড়াই শরীরে হাত দেন বলে অভিযোগ। সামনাসামনি বসে থাকা অবস্থায় কুস্তিগিরের পায়ের উপর পা রাখেন ব্রিজভূষণ। হাঁটুতে হাত দেন তিনি। কুস্তিগিরের অভিযোগ, তাঁর চুপ করে থাকার সুবিধা নেন ব্রিজভূষণ।

দ্বিতীয় জন: নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে তাঁর শরীরে হাত দেন ব্রিজভূষণ। অনুশীলন করার সময় কোচের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাঁর জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেন অভিযুক্ত ফেডারেশন কর্তা। তাঁর ঘরে ডেকে পাঠিয়ে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

তৃতীয় জন: তাঁর কাছে ফোন ছিল না। পরিবারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার নাম করে অভিযোগকারী কুস্তিগিরকে ঘরে ডাকেন ব্রিজভূষণ। ফোন দেওয়ার নাম করে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অভিযুক্ত কর্তা। প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই কুস্তিগির।

চতুর্থ জন: নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে তাঁর শরীরেও হাত দেন ব্রিজভূষণ। বুক থেকে পেট পর্যন্ত হাত বোলান তিনি। অভিযোগকারী জানান, যে হেতু জানতেন উনি মেয়েদের সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করেন তাই কখনও তাঁর সঙ্গে আলাদা করে খেতে যেতে চাননি।

পঞ্চম জন: ছবি তোলার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন ওই কুস্তিগির। সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। অভিযোগকারী ছিলেন একেবারে শেষ দিকে। তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান ব্রিজভূষণ। অভিযোগকারী বুঝতে পারেন তাঁর পিছনে হাত রেখেছেন অভিযুক্ত। সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গেলে কুস্তিগিরের কাঁধ ধরে আটকে রেখেছিলেন ব্রিজভূষণ।

ষষ্ঠ জন: ছবি তোলার নাম করে তাঁকে কাছে টেনে নেন ব্রিজভূষণ। কাঁধ ধরে রেখেছিলেন। নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই কুস্তিগির। ব্রিজভূষণকে ধাক্কা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। তখন ব্রিজভূষণ তাঁকে বলেন, “বেশি চালাকি করতে যেয়ো না। আগামী দিনে কোনও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে না।”