কুমিল্লায় এজেআর কুরিয়ার থেকে নকল ট্যাক্স স্ট্যাম্পযুক্ত সিগারেট জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কুমিল্লা নগরীর এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস থেকে দুই লাখ শলাকা জাল ব্র্যান্ডরোল যুক্ত বিপুল পরিমাণ নকল পাইলট ব্রান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে র‌্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লার সাত তলা সিপিসি-২ এর অধিনায়ক মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিবের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

২১ নভেম্বর (শনিবার) সকালে এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস থেকে নকল পাইলট সিগারেটের একটি চালান মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই সময় র‌্যাব কুরিয়ার অফিসে অভিযান চালিয়ে নকল পাইলট সিগারেট আটক করে। আটককৃত সিগারেটগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ লাখ টাকা। নকল সিগারেট ছাড়াও সিগারেট বহনকারী মাইক্রোবাসসহ মো. ইউসুফ আলী ও মো. শাহাদাৎ হোসেন নামে দুই ব্যাক্তিকে আটক করে র‌্যাব-১১।

ভ্যাট চালান ছাড়া অবৈধ সিগারেট আটকের বিষয়ে কুমিল্লা র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ এর অধিনায়ক মেজর তালুকদার নাজমুছ সাকিব জানান, “কুরিয়ার সার্ভিসের বিষয়ে আমাদের গোয়েন্দারা তদন্ত করছে। পাশাপাশি পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনত ব্যবস্থা নিবে।”

কুমিল্লার এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসে এই নকল সিগারেটের চালানটি এসেছে মনোহরী সামগ্রী নামে। সিগারেটের ভ্যাট চালান ব্যতিত সিগারেট পরিবহন করা অবৈধ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কৌশলে বিভিন্ন সামগ্রীর অন্তরালে এই সিগারেট দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করে যাচ্ছে। যার সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসের মতো বিভিন্ন কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানকে।

এর আগেও সিলেট নগরীর কুমারপাড়া পয়েন্টে এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিসে অভিযান চালিয়ে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহৃত ‘রমনা’ ব্রান্ডের নামে ১০ লাখ টাকা মূল্যের দুই লাখ ২০ হাজার শলাকা সিগারেট আটক করেছে কাস্টমস এক্সাইজ এ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট। এছাড়াও ফেনী ভ্যাট বিভাগ ফেনী জেলার এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ১১ লাখ টাকা মূল্যের সাড়ে তিন লাখ টাকার অবৈধ সিগারেট জব্দ করেছে।

ঢাকা, সিলেট, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নিরাপদে অবৈধ সিগারেট পরিবহন করা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যাপারে কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কিনা এই বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা কাস্টমস ও ভ্যাটের সহকারি কমিশনার সালাহউদ্দিন রিপন জানান, “যে সব কুরিয়ার সার্ভিস এসব অবৈধ সিগারেট পরিবহন করছে তাদের বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করলে বা সঠিক তথ্য দিলে আমরা দ্রুত তদন্ত করে এসব কুরিয়ার সার্ভিসের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবো।”

বাংলাদেশের ভ্যাট আইন অনুযায়ী, ভ্যাট চালান ব্যাতিত কোনো কুরিয়ার সার্ভিসে সিগারেট পরিবহন নিষিদ্ধ। ভ্যাট আইন অমান্য করে বারবার ভ্যাট চালান ছাড়াই দেশের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ সিগারেট পরিবহন করছে এজেআর পার্সেল ও কুরিয়ার সার্ভিস। ফলে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অবৈধ সিগারেট পরিবহন বন্ধ করতে অতিদ্রুত কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে কাযকরী পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স/আর