কিম জং উনের মৃত্যুর গুঞ্জন!

গত কয়েক মাস ধরেই উত্তর কোরিয়ার রাজপুত্র কিম জং উনের মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন চলছে।

শনিবার সেই গুঞ্জনের আগুনে ঘি ঢাললেন দক্ষিণ কোরিয়ার এক সাবেক কূটনীতিক। বলেছেন, কোমায় চলে গেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম।

আর এ কারণেই এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিচ্ছেন বোন কিম ইয়ো জং। তার এই দাবি ফলাও করে ছাপা হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। কিম মারা গেছেন বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ।

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কিম দেই জংয়ের আমলে রাজনৈতিকবিষয়ক কমিটির সচিব ছিলেন চ্যাং সং মিন। খ্যাতনামা কূটনীতিক হিসেবে হাতের তালুর মতো চেনেন উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতির চালচলন।

চ্যাং সম্প্রতি তার দেশের সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে, কিম জং উন কোমায় রয়েছেন। কিন্তু তার জীবন শেষ হয়নি।’ এই অসুস্থতার জেরেই কিম তার কিছু ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন বোনের হাতে।

কিম আর বেঁচে নেই বলে দাবি করেছেন কেউ কেউ। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সাংবাদিক রয় কেলি।
এক সময় উত্তর কোরিয়ায় অনেকটা সময় কাটানো

এই সাংবাদিক বলছেন, দেশটিতে এমনভাবে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় যে সেখানে কি ঘটছে তা দেশটির প্রভাবশালী নাগরিকরাও জানতে পারে না।

ডেইলি এক্সপ্রেসকে এক সাক্ষাৎকারে কেলি বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি, তিনি (কিম) মারা গেছেন।’

কিম জং উনের পর উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থায় ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ ধরা হয় তার বোন কিম ইয়ো জংকে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স সার্ভিসের প্রতিনিধিরা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বোনের হাতে কিমের ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল সেই বৈঠকের আলোচনার বিষয়।

বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, ‘কিম ইয়ো জং, ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির ভাইস ডিপার্টমেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করছেন। যদিও ‘সর্বোচ্চ ক্ষমতা’ এখনও তার ভাইয়ের হাতেই রয়েছে।’

নিজের ‘চাপ কমাতেই’ নাকি বোনের হাতে কিছু ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন কিম। জানানো হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সেই রিপোর্টে।

গত কয়েক মাস ধরেই জনসমক্ষে অনুপস্থিতি কিমকে নিয়ে জল্পনা বেড়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। এপ্রিলে ছড়ায়, হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের সফল না হওয়ায় গুরুতর অসুস্থ কিম।

তার মৃত্যুর একটি ‘ফেক’ ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় জোরদার হয়েছিল জল্পনা। কিমের দাদা ও উত্তর কোরিয়ার সাবেক শাসক কিম ইল সাং’র জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে কিমের অনুপস্থিতি এ জল্পনার পারদ আরও চড়ে।

কিন্তু উত্তর কোরিয়া প্রশাসন এ নিয়ে খোলসা করে কখনই কিছু জানায়নি। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ দাবি করেছিল, মে দিবস উপলক্ষে রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর কাছে সানচনে গিয়েছিলেন কিম। সেখানে একটি সার কারখানার উদ্বোধন করেন তিনি।

তবে দক্ষিণ কোরীয় কর্মকর্তা চ্যাংয়ের এই সাম্প্রতিক দাবি কতখানি ঠিক- তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে।