কারাবন্দীদের মোবাইলের কথোপকথন রেকর্ড করা হবে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কারাবন্দীদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথোপকথন রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। তিনি বলেন, একটি নীতিমালার ভিত্তিতে এসব মনিটরিং করা হবে। সিনিয়র জেল সুপার/জেল সুপারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যর একটি কমিটি সার্বিক বিষয়টি মনিটরিং করবেন।

আজ বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এসংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন দিদারুল আলম। জবাবে মন্ত্রী বলেন, জঙ্গি, টপটেরর ও বিভিন্ন আলোচিত মামলার স্পর্শকাতর বন্দিদের এ সুবিধার বাইরে রাখা হবে। এ কারণে কারাগার থেকে মোবাইল ফোনে অপরাধে মদদ দেওয়ার কোন সুযোগ থাকবে না। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কারা বন্দিদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পাইলট প্রকল্প টাংগাইল জেরা কারাগারে শুরু হযেছে। টেলিফোনে কথা বলার কার্যক্রম অন্যান্য কারাগারে চালু করার জন্য ‘দেশের সকল কারাগারে প্রিজন লিংক স্থাপন’ শিরোনামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকারি দলের মোজাফফর হোসেন এর প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার কক্ষটি ঐতিহাসিক স্বাক্ষ্য হিসেবে রাখার জন্য সংস্কার ও রক্ষাণাবেক্ষনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগার এর ইতিহাস, ঐতিহাসিক ভবন সংরক্ষণ ও পারিপার্শিক উন্নয়ন শিরোনামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের আওতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করা স্মৃতি জাদুঘর এবং জাতীয় চার নেতা কারা স্মৃতি জাদুঘর এর সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পটি গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। একই বছরের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। বর্তমানে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে। এদিকে আগামী ৫ বছরে আরও ৫০ হাজার পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি পরিকল্পনায় রয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে আগামী ৫ বছরে পুলিশের জনবল পর্যাক্রমে আরও ৫০ হাজার বৃদ্ধির বিষয়ে মত প্রকাশ করেন। মন্ত্রী জানান, দেশের আইনশৃংখলা রক্ষার্থে বর্তমান সরকারের পূর্ববর্তী দুই মেয়াদে অর্থাৎ (২০০৯-২০১৩) বাংলাদেশ পুলিশে বিভিন্ন পদবীর মোট ৩৩ হাজার ১০২টি পদ সৃজন করা হযেছে। পরবর্তী দ্বিতীয় মেয়াদে অর্থাৎ (২০১৪-২০১৮) বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ৫০ হাজার পদ সৃজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৫০ হাজার পদের মধ্যে পুলিশের বিদ্যমান বিভিন্ন ইউনিটের কাঠামো সংস্কারসহ বিভিন্ন পদবীর মোট ৪৮ হাজার ২৯৯টি পদ সৃজন সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য ও সম্পদ রক্ষায় আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সরকারী দলের নিজামউদ্দিন হাজারীর প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদ রক্ষায় জলদস্যু/বনদস্যুদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙখরা বাহিনী কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানকালে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আইনশৃংখলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের ফলে জলদস্যু/বনদস্যুদের অনেকেই কোনঠাসা হয়ে আইনশৃংখলা বাহিণীর কাছে আত্মসমর্পন করছে। চট্রগ্রাম-৩ আসনের মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বর্তমানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। সে নীতি বাস্তবায়নে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ডসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারি সংস্থা মাদক আপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করছে।