আততায়ীর গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবার কানাডার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকা ত্যাগ করেন। মুহিবুল্লাহর পারিবারিক বন্ধু মানবাধিকারকর্মী নূর খান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং আইওএম’র সহযোগিতায় নিহতের স্ত্রী নাসিমা খাতুন, ৯ সন্তান, জামাতাসহ ১১ জন কানাডা গেছেন। বাংলাদেশ সরকার এবং কানাডা সরকারের মধ্যকার এক সমঝোতায় তাদের পাঠানো হয়েছে। কানাডা সরকার তাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেবে বলে জানা গেছে।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) এয়ারপোর্টে যাওয়ার আগে বিকেল ৫টার পরে রাজধানীর একটি হোটেলে তাদের (মুহিবুল্লাহর পরিবারের) সঙ্গে আমার দেখা হয়। তারা গতকাল রাতের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন। তাদের রিফিউজি মর্যাদা দিয়ে কানাডা সরকারের অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রামের আওতায় নেওয়া হচ্ছে।

গত বছরের (২০২১ সালের) ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। এ ঘটনার জন্য তার পরিবার শুরু থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরসাকে (আরাকান স্যালভেশন আর্মি) দায়ী করে আসছে।

মিয়ানমারের মংডুতে স্কুলে শিক্ষাকতা করতেন বলে রোহিঙ্গাদের কাছে তিনি ‘মুহিবুল্লাহ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা শিবিরে মহাসমাবেশ করে আলোচনায় আসেন মুহিবুল্লাহ। একই বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১৭ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে ২৭ জন প্রতিনিধি অভিযোগ দেন মুহিবুল্লাহ ছিলেন তাদের একজন।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তারা।

মুহিবুল্লাহর পরিবারের দাবি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে সক্রিয় থাকায় এবং শিবিরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার কারণে মুহিবুল্লাহকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে মুহিবুল্লাহর পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে আসছিল।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ