কাউন্সিলর প্রার্থী সুমনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সন্তানকে বলৎকারের প্রতিবাদ ও দোষী তৌহিদুল হক সুমনের বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভিকটিমের মা মর্জিনা বেগম নিরাপত্তা চেয়েছেন।

নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকার যুবলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম সুমন কর্তৃক ইউসেফ স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীর জনৈক ছাত্র চাঞ্চল্যকর বৎকারের ঘটনায় তার পরিবার আইনী সহায়তা না পেয়ে জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। অবিলম্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের মা মর্জিনা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান ভিকটিম। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, আমার ২য় সন্তান ভিকটিম মহানগরির শালবাগান ইউসেফ স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্র। গত ০৪-০৪-২০১৮ তারিখে দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে স্কুলের টিফিনে বাড়ী ফিরার পথে শিরোইল কলোনী ৩নং গলি এলাকায় আসিলে স্থানীয় রেজাউল হক মঞ্জুরের ছেলে মো. তৌহিদুল হক সুমন (৩৫) আমার সন্তানকে তার বাড়ীতে কাজ আছে বলে সাথে করে নিয়ে যেতে চায়।

আমার সন্তান টিফিন খেয়ে স্কুলে যেতে হবে বলে জানালে, তৌহিদুল হক সুমন ভয়-ভীতি ও চাকু দেখিয়ে তার সাথে যেতে বাধ্য করে। এরপর তৌহিদুল হক সুমন ভিকটিমকে তার নিজ বাড়ীতে নিয়ে তার শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ভিকটিমের যৌনাঙ্গ স্পর্শ করতে থাকে এবং তার প্যান্ট খুলতে বলে।

ভিকটিম অস্বীকৃতি জানালে তৌহিদুল হক সুমন বাড়ীতে কেউ নাই, চিৎকার করে কোন লাভ হবেনা বলে জানায় এবং জোরপূর্বক তাকে বলৎকার করে। এসময় তৌহিদুল হক সুমন তার সহকর্মীর দ্বারা বলৎকারের ঘটনা তার মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। এসময় বলৎকারের শিকার আমার সন্তান কান্না-কাটি শুরু করলে তাকে থামতে বলে এবং ভিডিওধারনের কথা উল্লেখ করে তার কথামত না চললে তোকেসহ তার পিতাকে হত্যার হুমকি প্রদান করে।

ভিকটিম উক্ত ঘটনা ভয়ে কাউকে কিছু না বললে পরের দিন তৌহিদুল হক সুমন আবারো তাকে ডেকে বলৎকারের সুযোগ নেয়। এরপর ভিকটিম সুমনের পাশের বাড়ীর ভাড়াটিয়া সোহাগকে ঘটনাটি জানায়। সোহাগ ঘটনাটির প্রতিবাদ করলে তৌহিদুল হক সুমন সোহাগকে মারপিট করে বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। এক পর্যায়ে সোহাগ প্রাণভয়ে আত্মগোপন করে।

উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মহানগরির চন্দ্রিমা থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা গ্রহন করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তিনি নিরুপায় হয়ে রাজশাহী চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত “পর্ণ্যগ্রোফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২” এর ৮(১) (৩) ও ৮(৫) (ক) ধারা, তাং-০২/০৭/২০১৮ মামলাটি রঞ্জু করে। বিজ্ঞকোর্ট মামলার তদন্তভার স্থানীয় বোয়ালিয়া থানাকে প্রদান করেন।

কিন্তুু থানা পুলিশ অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে বলে ভিকটিমের পরিবার জানান। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয় পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আসামী তৌহিদুল হক সুমন আমাকেসহ আমার স্বামী আবুল বাসার জুয়েল ও সন্তানদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

বর্তমানে তৌহিদুল হক সুমন আসন্ন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ঠেলাগাড়ি মার্কায় ভোটে দাঁড়িয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের পরিবার গরিব ও অসহায় হওয়ায় তার সন্তানের জীবনে কলঙ্ক লেপনকারি লম্পট, সন্ত্রাসী তৌহিদুল হক সুমনকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করার জোর দাবী জানান।

অভিযোগের বিষয়ে তৌহিদুল হক সুমন বলেন, আমি সংবাদ সম্মেলনের কথা শুনেছি। আমাকে বিপাকে ফেলার জন্য এমন সংবাদ সম্মেলন করছে। এছাড়া তিনি নির্বাচন করছেন তাই এমন অপ্রচার চালাচ্ছেন।

 

স/আ