কলেজ অধ্যক্ষকে অবৈধভাবে বরখাস্ত করার অভিযোগ সভাপতির বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

অধ্যক্ষকে অবৈধভাবে সাময়িক বরখাস্ত করার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শহীদ নাদের আলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বুধবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সভাপতি মাহবুব আলম বাবু শেখের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, মাহবুব আলম স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। গত জানুয়ারিতে তিনি কলেজের সভাপতি হয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর মাহাবুব আলম কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ তুলে সম্প্রতি অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্তও করেছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সাময়িক বরখাস্ত অধ্যক্ষ রুহুল আমিন বলেন, ‘গত জানুয়ারিতে মাহাবুব আলমকে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে কলেজের সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি আমার সাথে অশালীন আচরন শুরু করেন এবং বিভিন্ন ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাসেই সভাপতি দুর্নীতি শুরু করেন। এক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য নগদ দুই লাখ টাকা অনুদান দিলে তা সভাপতি আত্মসাৎ করেন। কলেজের নামে বরাদ্দ এনে দেবো বলে তিনি অধ্যক্ষের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাঁর এসব কর্মকাণ্ডের জন্য গভর্নিং বডির ৯ জন সদস্য তার প্রতি অনাস্থা নিয়ে আসেন। এই অনাস্থার কপি বিধি অনুযায়ী সাত হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফটসহ শিক্ষা বোর্ডে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সভাপতি পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গত ৮ সেপ্টেম্বর তিনি আর্থিক অনিয়ম, কমিটিকে না মানা এবং শৃঙ্খলা নষ্টের অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ জন্য তিনি আগেই জোর করে রেজুলেশন খাতা কলেজ থেকে নিয়ে যান।

রুহুল আমিন বলেন, কাউকে বরখাস্ত করতে হলে পর পর তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হয়। কিন্তু তিনি কোন নোটিশ পাননি। কলেজের প্যাডের বদলে সাদা কাগজে তিনি বরখাস্তের আদেশ লিখে পাঠান। বিধি বহির্ভুতভাবে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর গত ১ অক্টোবর মাহাবুব আলম তাঁর পছন্দের শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে তিনি জানান।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২ অক্টোবর সকালে মাহাবুব আলম তাঁর ভাড়া বাসার সামনে গিয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। বলেন, ‘নিচে নেমে আয়, খেলা হবে।’ রুহুল আমিন নিচে নেমে গেলে তিনি তার গেঞ্জির কলার ধরে মারতে শুরু করেন। মারধরের পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এখন সভাপতিই বলে বেড়াচ্ছেন যে তাঁকেই মারধর করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহাবুব আলম বলেন, রুহুল আমিনই দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি ৭৬ লাখ টাকা দুর্নীতি করেছেন। আমি দায়িত্ব নিয়ে সেটা ধরেছি। সে কারণে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রুহুল আমিন জামায়াতের লোক। তিনি সত্য কথা বলেন না। তিনি তো আমার নামে চাঁদাবাজির মামলাও দিয়েছিলেন। আদালতে সে মামলা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে।

জি/আর