কলকাতায় অ্যাডিনো ভাইরাসে এ পর্যন্ত ৪২ শিশুর মৃত্যু 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
এর মধ্যে কলকাতার ‘মেডিকেল কলেজ’ এ এখনও পর্যন্ত ১৫ জন শিশুর মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। অপরগুলো শিশু হাসপাতাল ‘বিসি রায় হাসপাতাল’ এ শেষ খবর অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৮ জন শিশুর।

এছাড়াও, কলকাতার পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ৫ জন, পিয়ারলেস হাসপাতালে ২ জন, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ২ শিশুর মৃত্যু হল।

বর্ধমান মেডিকেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শিশু বিভাগে ১২০টির ওপর বেড রয়েছে। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৯৯ জন। এদের অনেকেরই জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ১৯-২০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে।

শহর থেকে জেলা, কোথাও কোনো হাসপাতালে শিশুরোগ বিভাগের সাধারণ শয্যা থেকে পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু) ফাঁকা নেই। অবস্থা এতই ভয়াবহ যে, খালি থাকছে না লাইভ সাপোর্টের যন্ত্র ‘ভেন্টিলেটর’।

কলকাতার পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথের পিকু-র প্রধান চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরির কথায়, অ্যাডিনো ভাইরাস এখন মহামারির আকার নিয়েছে। যাদের বয়স দুবছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে ভয়ের পরিমাণ বেশি। এবং বয়স এক বছরের কম হলে ভয় আরও বেশি। এই বয়সের বাচ্চাদের ভীষণ সাবধানে রাখতে হবে।

তাঁর পরামর্শ, বড়দের কারও জ্বর-সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা, চোখ লাল হলে অবশ্যই বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ, বড়দের থেকেই এই সংক্রমণ বাচ্চাদের মধ্যে ছড়ায়।

শিশুরোগ চিকিৎসকেরাও জানাচ্ছেন, অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশুদের ফুসফুস ও শ্বাসনালি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ সর্দি-কাশি শ্বাসকষ্টের বদলে যেতে দুদিনও সময় লাগছে না।

পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালেও। জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশুর শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখতে ইতোমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। যাতে বাড়িতে মা-বাবা সন্তানকে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন, তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা।

চিকিৎসকরা বলছেন, উপসর্গ মূলত সর্দি-কাশি-জ্বর সঙ্গে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, ডায়েরিয়া, বমি, পেটব্যথা এবং ফুসফুসে সংক্রমণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এসবই অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ। এই ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে ৬ মাস থেকে ৪ বছরের শিশুরা।