করোনা: ২০ লাখ ডলারের ললিপপ কিনে বরখাস্ত মাদাগাস্কারের মন্ত্রী

আফ্রিকার দারিদ্র্যপীড়িত দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারের শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি ২০ লাখ ডলার খরচ করে স্কুলের বাচ্চাদের জন্য ললিপপ কিনেছিলেন। কারণটাও বেশ অদ্ভূত। গাছের নির্যাস থেকে বানানো করোনার ভেষজ ওষুধ ওই শিশুদের খাওয়ানোর পর তিনি তাদের হাতে তিনটি করে ললিপপ দেবেন।

করোনার ভ্যাকসিন বানানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও যেখানে বিজ্ঞানীরা এখনো সফল হতে পারিনি সেখানে মাদাগাস্কার হারবাল ওষুধ বানিয়ে বলছে, এটা খেলে ৭ দিনেই করোনা সারবে। সেই ওষধু পরীক্ষার জন্য স্কুলশিশুদের তা পান করানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল দেশটি। তেতো মুখ মিষ্টি করতেই এমন উদ্যোগ মন্ত্রীর।

আর তাই মন্ত্রী ২০ লাখ ডলারের ললিপপ কেনার অর্ডার দিতে যাচ্ছিলেন। তবে মন্ত্রীর এহেন কাজে আপত্তি জানান ভেষজ ওই হারবাল ওষুধের প্রচার চালানো প্রেসিডেন্ট অ্যান্দ্রি রাজোলিনা। তাই তিনি বরখাস্ত করেছেন ললিপপ কিনতে যাওয়া শিক্ষামন্ত্রী রিজাসোয়া অ্যান্দ্রিমানানাকে।

সম্প্রতি ‘কভিড-অর্গানিক্স’ নামের ওই টনিক বাজারজাত করার ঘোষণা দেয় মাদাগাস্কার। দেশটির প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোলিনা স্বয়ং এ ভেষজ ওষুধের গুণাগুণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন বোতল থেকে সেই টনিক গলায় ঢেলে দাবি করেছেন, এ ওষুধ খেয়ে দুই করোনা রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

মূলত ‘আর্টেমিশিয়া’ নামে এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ ও তার গুল্ম থেকে ওষুধটি তৈরি করেছে মাদাগাস্কার। ‘হারবাল চা’ হিসেবে এটি বাজারজাত করেছে দেশটি। তবে দেশটির ন্যাশনাল মেডিকেল অ্যাকাডেমি এই ওষুধ নিয়ে তাদের সংশয়ের কথা জানিয়ে বলেছে, এটা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সতর্ক করে বলেছে, এ টনিক করোনা চিকিৎসায় পরীক্ষিত নয়। তারপরও প্রেসিডেন্ট রাজোলিনার দাবি, ‘এ ওষুধ যদি কোনো ইউরোপীয় দেশ আবিষ্কার করতো, তাহলে তারা এসব সমালোচনা করতো না। আফ্রিকার প্রতি পশ্চিমাদের এটি অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ।’

ভারত মহাসগারে অবস্থিত এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ইতোমধ্যে প্রায় ১ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে ৭ জন। তবে অনেকে বলছেন, সরকার করোনা পরীক্ষা নিয়ে উদাসীন। খুব স্বল্প পরিমাণে পরীক্ষা হচ্ছে। যথাযথভাবে পরীক্ষা হলে এই সংখ্যাটা হবে ধারণাও চেয়েও অনেক বেশি।