করোনা শনাক্তের প্রক্রিয়া নিয়ে চিকিৎসকরাই সন্দিহান

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৫ শিক্ষানবীশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকের করোনা শনাক্তের প্রথম ফলাফল আসে পজিটিভ। তবে ৩ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় পরীক্ষায় তাদের ফলাফল নেগিটিভ আসে।

প্রথমে সোমবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ১৫ চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছিল। আক্রান্ত ১৫ জনই নারী এবং তাদের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না।

এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফা পরীক্ষা করে বৃহস্পতিবার রাতে জানানো হয় তারা কেউই করোনায় আক্রান্ত নন। বিষয়টি নিয়ে ওসমানী হাসপাতালসহ বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জন চলছে। অনেকে করোনা পরীক্ষার প্রক্রিয়ায় কোনো গলদ আছে কি না সে প্রশ্নও তুলেছেন।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসূত্র জানায়, কলেজের ৫৩তম ব্যাচের ১৫ নারী ও এক পুরুষ শিক্ষানবীশ চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত বলে সোমবার নিশ্চিত হওয়া যায়। ঢাকার আইইডিসিআরে নমুনা পরীক্ষা শেষে ওই দিন রাতে তাদের করোনা পজিটিভ হিসাবে শনাক্ত করা হয়। এরপর তাদের ইন্টার্ন হোস্টেলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

তবে আক্রান্ত ১৫ নারী চিকিৎসকের মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ না থাকায় শুরুতেই রিপোর্ট নিয়ে স্বয়ং চিকিৎসকদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়ে যায়।

ওসমানীর চিকিৎসকদের একটি ফেইসবুক গ্রুপে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলে।

এর প্রেক্ষিতে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মইনুল হক ওই ফেইসবুক গ্রুপে লেখেন, ‘৫৩তম ব্যাচ তোমাদের আবার পরীক্ষা করা হবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। ইনশাল্লাহ নেগেটিভ হবে। আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি- অধ্যক্ষ সিওমেক।’

এরপর ওই ১৬ চিকিৎসকের আবার করোনা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এবার পরীক্ষা করা হয় ওসমানী হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে। পরীক্ষা শেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে জানানো হয় এই ১৬ জনের মধ্যে ১৫ জন নারী চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত নন।

এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় শুক্রবার বলেন, এই ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ১২ দিন আগে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠান হয়েছিল। তবে সোমবার রাতে আইইডিসিআর থেকে জানানো হয় এরা করোনা পজিটিভ। এরপর মঙ্গলবার এদের আবার নমুনা সংগ্রহ করে ওসমানীর ল্যাবে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। বৃহস্পতিবার পরীক্ষায় তাদের করোনা নেগেটিভ এসেছে। এখন আবার পরীক্ষা করা হবে এবং ফল নেগেটিভ হলে তাদের করোনামুক্ত ঘোষণা করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘ঢাকা এবং সিলেট দুই জায়গায়ই যথাযথ নিয়ম ও সতর্কতা অবলম্বন করেই এদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে সেটা তাদের ব্যাপার, আমার কিছু বলার নেই।’

ডা. হিমাংশু আরো বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে এই ১৫ জনের নমুনা সংগ্রহের মাঝখানের ব্যবধান ১২ দিন। তাই আগের নমুনায় ফল পজিটিভ আসলেও পরের নমুনায় ফল নেগেটিভ আসতেই পারে। এ সময়ে তারা কোনো উপসর্গ ছাড়াই করোনা কাটিয়ে উঠেছেন।’ সূত্র: দেশ রূপান্তর