করোনা আতঙ্কে পেলেন না অ্যাজমার চিকিৎসাও, ঢাবি ছাত্রের মায়ের মৃত্যু!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

করোনা ভাইরাস এখন বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নিয়েছে। দিন দিন বাড়ছে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। একইসঙ্গে মানুষের ভেতরও ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। বিচ্ছিন্ন হচ্ছে এক দেশ থেকে আরেক দেশ।

বাংলাদেশেও করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। এমন অবস্থায় সামান্য জ্বর, সর্দি, কাশির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে গেলেও কোনো কোনো হাসপাতাল চিকিৎসা না দিয়ে রোগীকে ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার করোনা সন্দেহ হলে কোনো কোনো হাসপাতাল রোগীকে অন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী মো. খালিদ রহমান শুক্রবার (২০ মার্চ) তার ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, তার অ্যাজমা আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু করোনা সন্দেহে কোথাও ভর্তি করা হয়নি। খালিদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তার মা অ্যাজমা রোগী। তার পরিবারের কোনো সদস্য বিদেশে থাকেন না। তিনি করোনা আক্রান্ত হননি। কেউ শোনেনি তার কথা। হাসপাতালের কংক্রিটের দেয়ালে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এসেছে তার সব আকুলতা। অবশেষে তার মাকে নারায়ণগঞ্জের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করাতে পারলেও শুক্রবার সকালে তার মা মারা যান। পাঠকদের জন্য মো. খালিদ রহমানের ফেসবুক স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘মা’র এজমার সমস্যা বহু দিনের পুরানো। হালকা জ্বর এসেছিলো সপ্তাহখানেক আগে। প্রচন্ড বুক ব্যথা আর পেট ব্যথার চিকিৎসার জন্যে ওনাকে নিয়ে আমি বারডেম গেছি। বারডেম ওনাকে রাখে নাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে নাকি নির্দেশ শ্বাসকষ্ট আর জ্বর আসা রোগী দেশে করোনা আসার জন্যে ভর্তি নেয়া যাবে না। বারডেম মুগদা মেডিক্যালে রেফার করছে। আমি ওনাকে নিয়ে মুগদা মেডিক্যালে গেছি, কুর্মিটোলা গেছি, ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেছি।

কেউ রাখে নাই। কেউ না। আমি বারবার বলছি তার এজমার সমস্যা পুরানো। আমাদের বাসার কেউ দেশের বাইরে যায় নি কিছুদিনের মধ্যে। কেউ শোনে নাই। ঠেলে আরেক জায়গায় পাঠায়ে দিছে কেবল। ঢাকা মেডিক্যালে করানো ইসিজি রিপোর্ট যে খারাপ ছিলো তাও ওখানে আমাকে কেউ বলে নাই। এ আমি জানছি গতকাল সন্ধ্যায় মা’কে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ডায়বোটিস হাসপাতালে যাওয়ার পর।

আজ আমার মা রাজিয়া সুলতানা মঞ্জু সকাল ছয়টায় কার্ডিয়াক এরেস্টে মারা গেছেন। ওনাকে আমি একটা প্রাইভেটে ভর্তি করাইতে পারছিলাম গতকাল রাতে। বাদ জুম্মা আমার মায়ের জানাজা।’