করোনায় রেমডেসিভির ওষুধ কতটা কার্যকর, যা বললেন বিশেষজ্ঞরা

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক ও ওষুধ তৈরির জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি করোনা চিকিৎসায় জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের গিলিয়ার্ড সায়েন্স কোম্পানির অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

এর পর বাংলাদেশেও আটটি কোম্পানি এ ওষুধ তৈরি করার অনুমোদন পেয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমডেসিভিরকে এই ভাইরাসের একমাত্র ওষুধ হিসেবে যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে, বিষয়টি আসলে তা নয়।

গবেষণার বরাত দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোভিড আক্রান্ত যেসব রোগীর শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে, তাদের সুস্থ হতে ১১ দিন লেগেছে।

অন্যদিকে যাদের এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়নি, তারা ১৫ দিনে সুস্থ হয়েছে।

রেমডেসিভির নিয়ে এর আগেও গবেষণা হয়েছিল- সার্স করোনা, মার্স করোনা এবং ইবোলা ভাইরাসের বিপক্ষে। তখন এ ওষুধ কাজ করলেও শেষ পর্যন্ত এফডিএর অনুমোদন পায়নি।

এর আগে এই ওষুধ নিয়ে প্রথম গবেষণাটি হয়েছিল চীনে। কিন্তু চীন বলেছিল করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে এ ওষুধ কার্যকরী নয়।

ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক রাজদৌলা রাফি যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণার কথা উল্লেখ করে বলেন, করোনা রোগীর মৃত্যু ঠেকাতে এই ওষুধ কার্যকরী নয়।

তিনি বলেন, চীনের গবেষণা ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে– এই ওষুধ কার্যকরী না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে যেসব কোম্পানি রেমডেসিভির ওষুধ তৈরি করছে, তাদের অনেকেই জোরালো প্রচারণা করছেন। তাদের অনেকেই বলছেন– রেমডেসিভির ব্যবহার করলেই করোনা রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।

এ বিষয় ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাইফুদ্দিন বেন্নুর বলেন, একটি ওষুধ কতটা কার্যকরী তা বোঝার জন্য যেসব বৈজ্ঞানিক ধাপ পার করতে হয়, এই ওষুধের ক্ষেত্রে তা হয়নি।

এ ধাপগুলো হচ্ছে–

১. প্রথমত ওষুধটাকে চিহ্নিত করা

২. ওষুধটা কার্যকর কিনা তা দেখা। এ জন্য প্রাণীর ওপর গবেষণা করা হয়।

৩. বাজারে অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে কার্যকারিতা তুলনা করা।

৪. ওষুধটির কোনো খারাপ প্রতিক্রিয়া আছে কিনা সেটি দেখা।

তিনি বলেন, এসব কাজ করতে অন্তত ১৬ মাস সময়ের প্রয়োজন।

তবে বর্তমানে অবস্থায় এটিই বোঝানো হচ্ছে যে, এই ওষুধ দ্বিতীয় বা তৃতীয় ধাপ পরীক্ষার পরেই আপাতত একটি অন্তর্বর্তীকালীন অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই ওষুধ ব্যবহারে করোনা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত মিলবে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

সূত্রঃ যুগান্তর