করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে দুই কারণে

সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এরই মধ্যে পৃথিবীতে করোনা রোগী দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

করোনায় প্রাণহানি ও আক্রান্তের পরিসংখ্যান রাখা আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারস তথ্যানুযায়ী, এ রোগে বিশ্বে সুস্থ হয়েছেন ৯১ লাখ ১০ হাজার ৭২৪ জন। মারা গেছেন ৬ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৭ জন ও আক্রান্ত দেড় কোটি।

করোনাভাইরাস অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ, যা হাঁচি, কাশি, লালা ও সর্দির সাহায্যে বাতাসের মাধ্যমে ছাড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ মানুষের সংস্পর্শে এলে অন্যজনের শরীরে এ ভাইরাস দ্রুত বংশ বিস্তার করে।

এই ভাইরাসে শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত করে। শ্বাসনালিতে প্রবেশ করলে ভাইরাসটি ফুসফুস ও ক্ষুদ্রান্ত্রকেও আক্রমণ করে লাইনিং নষ্ট করে দেয়। ফলে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কাজ করার ক্ষমতাও কমে যায়।

তবে করোনা হলেই যে মারা যাবেন এমনটি নয়। তবে কিছু কারণে করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

বেশ কিছু কারণে করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তার মধ্যে দুটি প্রধান কারণ হচ্ছে-
১. হঠাৎ শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যাওয়া।
২. দীর্ঘদিন অন্য রোগে আক্রান্ত থাকলে।

হঠাৎ শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে যা হয়-

যে কোনো রোগে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। আর করোনা আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম নয়।

আমাদের দেহে রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের স্বাভাবিক মাত্রা ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ। অক্সিজেনের মাত্রা এর চেয়ে কমে যাওয়াকে বলে হাইপোক্সিয়া।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের অনেক সময় রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে থাকে। অক্সিজেনের মাত্রা ৮০ শতাংশের নিচে নামলেই রোগীর অস্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস শুরু হয়, সেই সঙ্গে দেখা দেয় শ্বাসকষ্ট।

এ ছাড়া নীলাভ বর্ণ ধারণ করে মুখ, হাত, জিহবা ও চোখ। এ সময় রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন।

যেসব রোগে এই ভাইরাসের মৃত্যুঝুঁকি বেশি

ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হার্ট সমস্যা, ক্যান্সার, হাঁপানির মতো সমস্যা থাকলে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া রোগীর বয়স ৬৫ বেশি ও ধূমপায়ী হলেও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ে।

কী করবেন?

করোনার এখনও কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, মুখে কাপড় বা রুমাল ব্যবহার করে হাঁচি-কাশি দেয়া, বাইরে থেকে ফিরে পোশাক বদলে হাত-মুখ সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

লেখক:
ডা. সাঈদ এনাম, সহকারী অধ্যাপক, সাইকিয়াট্রি, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ।

 

সুত্রঃ যুগান্তর