করোনাভাইরাস: জীবাণুনাশক টানেলের চাহিদা বাড়ছে

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অফিস-আদালত, ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংক্রমণ রোধে জীবাণুনাশক সামগ্রী ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সব সময় মানুষ যাতায়াত করে এমন সরকারি-বেসরকরি অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্টের প্রবেশপথে জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছে। এতে করে জীবাণুনাশক (ডিসইনফেকশন) টানেল ও বুথ স্থাপন বাড়ছে।

এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা জিয়াউল হক জানান, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানসম্পন্ন ডিজইনফেকশন টানেল তৈরি করেছে আরএফএল। ব্যাংক, বিভিন্ন অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে জীবাণুনাশক এ টানেল ব্যবহারে বেশি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাজারে সরবারহ করা হচ্ছে। ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায় এসব ডিজইনফেকশন টানেল বিক্রি করা হচ্ছে।এতে ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে দিন দিন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় জীবাণুনাশক টানেল ও থার্মাল স্ক্যানার বসানোর তাগিদ দিচ্ছে বিভিন্ন মন্ত্রণালায় ও সরকারি অফিস। ইতোমধ্যে জীবাণুনাশক টানেল বসানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছে।

এর আগে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনায় সরকারি অফিসে জীবাণুনাশক টানেল ও থার্মাল স্ক্যানার বসাতে বলা হয়। এরপর সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনে জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়।

শুধু অফিস আদালত নয়, পাড়া-মহল্লার প্রবেশমুখে জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের আগ্রহ দেখা গেছে। রাজধানীর দক্ষিণ মুগদা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন জানান, গত মাসের শেষ দিকে আমাদের এলাকায় একজনের করোনা পজিটিভ আসে। এর পর আমাদের এলাকার সব বাড়িওয়ালাদের অংশগ্রহণে গলির প্রবেশমুখে একটি জীবাণুনাশক টানেল বসানো হয়েছে। বাইরের কেউ এখানে প্রবেশ করছে যে জীবাণুমুক্ত হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জীবাণুমুক্তের নামে ক্ষতির কারণ না হয় সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। তাই খরচ বাঁচাতে গিয়ে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকার এমন কেমিক্যাল মিশ্রিত জীবাণুনাশক টানেল ছিটানো যাবে না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৭ দিনের ছুটি চলছে। আগামী ৩০ মে শেষ হচ্ছে এ সাধারণ ছুটি। টানা ছুটির কারণে ইতোমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমেছে। কর্মহীন হয়ে বিপাকে পড়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এসব বিষয় বিবেচনায় ছুটির মেয়াদ না বাড়ানোর জন্য প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৩১ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধিসহ কিছু নিয়ম মানা সাপেক্ষে খুলছে সরকারি-বেসরকারি অফিস।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন দেয়া এ সংক্রান্ত ফাইল আমরা পেয়েছি। বৃহস্পতিবার নির্দেশনার প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারব বলে আশা করছি।’

তিনি জানান, বয়স্ক, অসুস্থ ও গর্ভবতী মহিলারা আপাতত অফিসে আসবেন না, গণপরিবহনও বন্ধ থাকবে। আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকবে।

সূত্রঃ জাগো নিউজ